বিদেশে এখন
0

ত্রিপুরায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি, ৯ রাজ্যে নতুন করে রেড অ্যালার্ট জারি

ভারতের ত্রিপুরায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও, আগামী দুইদিন ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় রাজ্যের তিনজেলাসহ পার্শ্ববর্তী নয় রাজ্যে নতুন করে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ। এতে, নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ত্রিপুরায় শনিবার ( ২৪ আগস্ট) পর্যন্ত বন্যা ও ভূমিধ্বসে ২৪ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেলেও, নতুন করে কোন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। আশ্রয়কেন্দ্রে ডায়রিয়ার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কায় মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন সেখানে ঠাঁই নেয়া বাসিন্দারা।

বন্যার পানির আগ্রাসী হানায় ভাসছে ভারতের ত্রিপুরা। এরইমধ্যে প্রাণ গেছে বহু মানুষের। ক্রমশ বাড়ছে ফসল ও গবাদি পশুসহ অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রাজ্যের অন্তত ১৭ লাখ মানুষ।

প্রবল বৃষ্টিতে বন্যা ও ভূমিধস পরিস্থিতিতে বাড়িঘরসহ সর্বস্ব হারা মানুষের একমাত্র ভরসা এখন আশ্রয়কেন্দ্র। বন্যার পানিতে আটকা পড়া প্রায় সাড়ে ৩ শতাধিক বাসিন্দাকে উদ্ধারের কথা জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও, আগামী দুইদিন ত্রিপুরাসহ নয় রাজ্যে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ। এতে, নতুন করে পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় ত্রিপুরার তিন জেলায় এখনও জারি রয়েছে রেড অ্যালার্ট।

এরমধ্যেই ত্রিপুরার কোথাও কোথাও মাঝে-মধ্যে সূর্য উকি দিতে শুরু করেছ। তবে এখনও বৃষ্টির পূর্বাভাস অব্যাহত থাকায় এবং বেশিরভাগ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় ফেরেনি স্বস্তি। ছেলে-মেয়ের বই-খাতা, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র হারিয়ে দিশেহারা আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেয়া বাসিন্দারা।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘গলা সমান পানি হয়েছে। জিনিসপত্র, কাগজপত্র সব ভিজে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’

আরেকজন বলেন, ‘বাচ্চাদের স্কুলের বই, ব্যাংকের কাগজপত্র ভিজে গিয়েছে।’

বন্যার পানি আমাদের গলা পর্যন্ত পৌঁছেছে। সবকিছু ভেসে গেছে এমনকি নথিপত্র, আমার পরিচয়পত্র সব শেষ হয়ে গেছে। যাওয়ার মতো কোনো জায়গা না থাকায় এখন আমরা এই স্কুলটিতে এসে আশ্রয় নিয়েছি।

বন্যার পানিতে আমার রেশন কার্ড, জরুরি কাগজপত্র, জামাকাপড়, ব্যাংকের পাস বই, আমার বাচ্চাদের বই-খাতাসহ সবকিছু ভেসে গেছে।

এদিকে, চলমান বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেই ডায়রিয়ার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় আশ্রয় শিবিরে ঠাঁই নেয়া মানুষদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে। তাই বিভিন্ন জায়গার আশ্রয় শিবিরে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত ও স্বচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

ভারতের পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা কালেক্টর ড. বিশাল কুমার বলেন, 'গত তিন-চার দিনের তুলনায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে আশ্রয় শিবিরে ঠাঁই নেয়া মানুষদের নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ এখন মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে ডায়রিয়ার শঙ্কা বাড়ছে।'

এদিকে, ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় ত্রিপুরা ছাড়াও মিজোরাম, মনিপুর, নাগাল্যান্ডসহ ৯ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি রয়েছে। এছাড়াও, আসাম-ওড়িশাসহ আরও ১০ রাজ্যে জারি করা হয়েছে অরেঞ্জ অ্যালার্ট ও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা।

tech