১৯৭০ এর দশকে দক্ষিণ কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র অর্জনে গোপনে একটি কর্মসূচি পরিচালনা করে। ব্যাপারটি যুক্তরাষ্ট্র জানার পর দেখা দেয় বিপত্তি। দুটি শর্ত জুড়ে দেয় ওয়াশিংটন। হয় দক্ষিণ কোরিয়াকে নিজেদের পথ দেখতে হবে অথবা যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রতিরক্ষার নিশ্চয়তা দেবে। শেষ পর্যন্ত মার্কিন সমর্থনকেই বেছে নেয় সিউল। এখনও দেশটিতে হাজার হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে।
অন্যদিকে, ভূরাজনৈতিক নাটকীয় পরিবর্তনে প্রতিবেশি দেশ উত্তর কোরিয়া অত্যাধুনিক পরমাণু অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়েছে। যা দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। চোখ রাঙাচ্ছে চীনও।
এ অবস্থায় দ্রুত পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বাড়াতে চাপ বাড়ছে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের ওপর। নিজদের সুরক্ষায় অন্য দেশের ওপর ভরসা করতে চায় না সিউলবাসী। সেক্ষেত্রে নিজেদের পরমাণু অস্ত্র সীমিতকরণ চুক্তি থেকে বের হয়ে আসার কথাও বলছেন অনেকে।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মতে, পারমাণবিক অস্ত্রে সমৃদ্ধ হতে গেলে, ঝুঁকির মুখে পড়বে ওয়াশিংটন-সিউল কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক। তিনি বলেন, উত্তরের হুমকি মোকাবিলায় মিত্রদের চাপ সৃষ্টি করাই সবচেয়ে সহজ, কার্যকর ও শান্তিপূর্ণ উপায়।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিন ওন-সিক বলেন, ‘এই মুহূর্তে দক্ষিণ কোরিয়া পরমাণু অস্ত্রে সুসজ্জিত হতে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল ধরবে। পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসলে অন্য দেশও আক্রমণ করতে পারে। এছাড়া, পশ্চিমের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছাবে।’
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত বিরোধে উত্তেজনা বাড়ছে এই অঞ্চলে। এরমধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার বন্ধুত্ব নতুন করে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আঞ্চলিক এই অশান্তির লক্ষ্যবস্তুতে আছে দক্ষিণ কোরিয়া।
শিন ওন-সিক বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব এশিয়াতে বেশকিছু বাহিনী প্রকাশ্যে বলপ্রয়োগ করে এই অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টায় আছে। এক্ষেত্রে সবার আগে সরাসরি প্রভাব পড়বে দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর।’
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার বলছে, বাইরের হুমকি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।