গেল ৭ অক্টোবর সুরক্ষিত ইসরাইলি সীমানার ভেতর নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে নির্মূল করতে গাজায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরাইল। প্রায় ৭ মাস ধরে চলা যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
বছরের শুরুতে জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক শরণার্থী সংস্থার প্রধানকে তলব করে ইসরাইল। অভিযোগ ছিল হামাসের এই হামলায় অংশ নেয় সংস্থাটির ১২ সদস্য। সত্যতা প্রমাণের আগেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ১৮টি দেশ বন্ধ করে দেয় ইউএনআরডব্লিউএ এর তহবিল।
তবে প্রথম থেকেই অভিযোগের বিরোধিতা করে আসছিল সংস্থাটি। জানানো হয়, যে ১২ জনের নামে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাদের মধ্যে গাজায় ইসরাইলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২ জন। বাকি ১০ জনের হামাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও তদন্তের স্বার্থে তাদের বহিষ্কার করা হয়। ৪ মাস পর সাবেক ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন স্বাধীন তদন্তকারী দল জানিয়েছে, অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি ইসরাইল। সোমবার ( ২২ এপ্রিল) দাখিল করা ৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এ ব্যাপারে কয়েক দফা জাতিসংঘ থেকে চিঠি পাঠালেও উত্তর দেয়নি নেতানিয়াহু প্রশাসন।
ফ্রান্সের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন কলোন্না বলেন, 'জাতিসংঘ ইসরাইলের কাছ থেকে কোনো প্রমাণ পায়নি। হয়তো তারা প্রমাণ উপস্থাপন করতে চায়নি। আপনারা আমাদের প্রতিবেদন দেখুন। সব প্রশ্নের উত্তর পাবেন।'
তবে এতোদিনে যা ক্ষতি হবার, তা হয়ে গেছে। মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষে প্রাণ হারাচ্ছে গাজার শিশুরা। ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থা, সুপেয় পানির সংকট ও সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়েছে গাজাজুড়ে। বন্ধ হয়ে গেছে গাজার লাইফ লাইনখ্যাত ইউএনআরডব্লিউএ এর ৪৫ কোটি ডলারের তহবিল। ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত সংস্থাটিতে অর্থায়ন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সবচেয়ে বড় দাতা দেশ যুক্তরাষ্ট্র।
প্রতিবেদন প্রকাশের পর সংস্থাটির পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। বিশ্লেষকদের ধারণা, এমন মিথ্যাচারের মাধ্যমে গাজায় মানবিক সংকট বাড়ানোর চেষ্টা ছিল ইসরাইলের।