হঠাৎই আলোর ঝলকানি, নিমিষেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত চারপাশ। খান ইউনিসের আল মাওয়াসির এই শরণার্থী শিবিরের মতো গোটা উপত্যকাজুড়ে একই পরিস্থিতি। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দিনভর হামলার পর রাতেও থেমে থেমে চলে আগ্রাসন। এতে এক দিনেই গাজায় প্রাণহানি ছাড়িয়েছে অর্ধশতাধিক।
ইসরাইলের বুলেট বোমার পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের ঘাতক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ক্ষুধা। যুদ্ধ শুরুর পর উপত্যকায় ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে প্রাণ হারিয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। যার বেশিরভাগই শিশু। টানা ৬০ দিন ধরে গাজায় বন্ধ ত্রাণ প্রবেশ। ৭০ শতাংশ এলাকায় জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ। এমন পরিস্থিতিতে ত্রাণ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। অন্যদিকে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, সংঘাত নিরসনে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের কোন বিকল্প নেই।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ নোয়েল ব্যারো বলেন, ‘গাজাবাসী নরকের মধ্যে বাস করছে। যা বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একযোগে কাজ করতে হবে। ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দ্বি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। আগামী জুনে এ লক্ষ্যে আমরা নিউ ইয়র্কে সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছি।’
অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সামরিক চাপকে মানবিক সহায়তা বন্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরাইল, যা দেখে আমি উদ্বিগ্ন। ত্রাণের বিষয়ে কোনো দর কষাকষি চলবে না। গাজায় বেসামরিক জনগণকে রক্ষার দায়িত্ব ইসরাইলকেই নিতে হবে। পাশপাশি ত্রাণ সরবরাহ চালুর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে।’
যদিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানের বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই ইসরাইলি সরকারের। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, গাজা অভিযানের উদ্দেশ্য কোনো ধরনের সমঝোতা ছাড়াই পূর্ণ বিজয় অর্জন। সেনাদের প্রশংসার পাশাপাশি জিম্মিদের মুক্তির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।
তিনি বলেন, ‘বিজয় অর্জনের জন্য সেনারা সিংহের মতো লড়াই করছে। ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য নিজেদের বলিদান দিচ্ছে। দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, আমাদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনবো। যুদ্ধ সম্পর্কে আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিষ্কার।’
এদিকে, ইয়েমেনের সাদা শহরের বন্দিশালায় হামলার রেশ না কাটতেই আবারও দেশটিতে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যৌথ এই হামলায় মার্কিনদের সঙ্গে যোগ দেয় ব্রিটিশ বিমানবাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, মার্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ১ হাজারের বেশি লক্ষ্যবস্তুতে চালানো হয়েছে হামলা।