গত ৬ মাস ধরে গাজায় ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা। সামরিক সহায়তা দিয়ে ইসরাইলিদের পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা অনেক দেশ। তবে জাতিসংঘসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। কিন্তু তাতে বিন্দু পরিমাণ টলেনি নেতানিয়াহু সরকার।
অন্যদিকে নিরীহ গাজাবাসী মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশের সমর্থন পেয়েছে। পরোক্ষভাবে ইসরাইলকে নাজেহাল করার চেষ্টা করেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী ও লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী।
এবার প্রথমবারের মতো ইসরাইলের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে নামতে যাচ্ছে ইরান। সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে হামলার প্রতিবাদে ইসরাইলে আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়ার ঘোষণা দেয় তেহরান। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। এক লিখিত বার্তায় ওয়াশিংটনকে ইরান জানায়, নেতানিয়াহুর ফাঁদে যেন যুক্তরাষ্ট্র পা না দেয়।
পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিরোধের কেন্দ্রস্থলে আছে ইরান। পশ্চিমাদের অভিযোগ, সবার আড়ালে পারমাণবিক অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়েছে ইরান। তবে তেহরান বলছে, শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক উদ্দেশ্যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চলছে।
সামরিক সক্ষমতা, সরঞ্জাম, সেনাবাহিনী ইত্যাদির বিচারে দুই দেশের মধ্যে অনেক পার্থক্য দেখা যায়। তবে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তির দিক থেকে ইরান ও ইসরাইল দুটি দেশই বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ওয়েবসাইটের সূচকে সামরিক শক্তিতে ১৪৫টি দেশের মধ্যে ইরানের অবস্থান ১৪তম আর ইসরাইলের অবস্থান ১৭তম।
ইসরাইলের চেয়ে ইরানের জনসংখ্যা দশগুণ বেশি। সেনা, নৌ ও বিমান এই তিনবাহিনীর সমন্বয়ে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী গঠিত। ১৮ বছর বয়সী সব ইহুদিদের সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। ১৯ বছর বয়সী ইরানি তরুণদের বাধ্যতামূলকভাবে দেড় বছর সামরিক বাহিনীতে কাজ করতে হয়।
নৌ শক্তিতে ইসরাইলের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে ইরান। ইসরাইলি নৌবাহিনীর তিনটি সাবমেরিন আছে। এছাড়া তিনটি যুদ্ধ জাহাজসহ ৫৭টি টহল জাহাজ আছে। অন্যদিকে ইরানের নৌ বাহিনীতে ২৩টি সাবমেরিন আছে। আর ১০০টির বেশি টহল ও উপকূলীয় যুদ্ধজাহাজ আছে ইরানের।
ইরানের আনুমানিক ১ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র, যা আরব উপসাগরে এবং এর বাইরে আঘাত হানতে সক্ষম বলে মনে করা হয়। দেশটির রেভোলিউশনারি গার্ডসের নিয়ন্ত্রণে প্রায় ৩০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আছে।
ইরান ও ইসরাইল দুই দেশেরই শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আছে। বিশেষ করে, ইসরাইলের 'আয়রন ডোম' আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাফল্য ঈর্ষণীয়। এছাড়া দেশ দুটির কাছে দূর ও মাঝারি পাল্লার বহু ড্রোন আছে। তবে ইরান ও ইসরাইলের কাছে পারমাণবিক বোমা আছে কিনা সে বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।