সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের বিভিন্ন সূত্র বলছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে লুহানস্ক প্রদেশে রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতি বেড়েছে। সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সমরাস্ত্রের মজুদ এই অঞ্চলে এতো বাড়াচ্ছে যে, তাদের প্রস্তুতি ইউক্রেনকে নাড়িয়ে দিতে পারে। এর মধ্যে গেলো বছরের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের ৬ লাখ ৩ হাজার স্কয়ার কিলোমিটারের ৫শ' ৫ কিলোমিটার দখলে নিয়েছে রুশ সেনারা। ভেজা মাটি শুষ্ক হয়ে গেলে শুরু হবে আরও তোড়জোড়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক বিশ্লেষকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সংবাদ মাধ্যম দ্যা ন্যাশনালের বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। এর মধ্যে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার নতুন সংযোজন গ্লাইড বোমা। ৭শ' ৫০ কেজির একটি বোমা নির্দিষ্ট দূরত্বে থেকে বিমান দিয়ে নিক্ষেপ করলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। আভদিভকা শহর এই সিরিজ বোমা হামলায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। আরও ভয়ঙ্কর বিষয়, কোন ধরনের সেনা সমাবেশ ছাড়াই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বছরে ৩ লাখ সেনা প্রস্তুত করতে পেরেছেন। সঙ্গে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ট্যাঙ্ক আর আর্টিলারি রাউন্ডের মজুত আছে। যদিও ইউক্রেনের এই ক্ষমতা সীমিত।
সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার রাশিয়া সম্মুখসারিতে ইউক্রেনের দুর্বল স্থানগুলো লক্ষ্য করে হামলা করবে। ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ বলছে, রাশিয়ার হামলায় এবার ভেঙে পড়তে পারে ইউক্রেনের সম্মুখসারির প্রস্তুতি। ব্রিটিশ সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মাত্র ১০০ মাইল অনাধিকার প্রবেশের জন্য এবার ৫০ হাজার সেনার প্রাণ বিসর্জন দিতে প্রস্তুত ভ্লাদিমির পুতিন।
এদিকে আর্টিলারি সংকটে ইউক্রেন হাজার হাজার কুয়াডকপ্টার ড্রোন মজুত করছে, যেগুলোর মধ্যে থাকে রকেট সংবলিত গ্রেনেড। যদিও সেই মজুতও খালি হচ্ছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, সমরাস্ত্র মজুত কোথায় করা হবে, সেটা খুঁজে বের করাই কঠিন। রাশিয়া জানে, ইউক্রেনের জন্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই সপ্তাহের মধ্যে গড়ে তোলা কঠিন, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা আটকে গেছে। তবে জুনের মধ্যে ইউক্রেনের কাছে চলে আসবে যুক্তরাষ্ট্রের এফ সিক্সটিন ফাইটার জেট। কমতে পারে আকাশপথে রাশিয়ার প্রভাব।
যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার ব্যয় মোট জিডিপির সাড়ে ৭ শতাংশে পৌঁছেছে। কিন্তু পশ্চিমাদের ইউক্রেনে সমর্থন দুর্বল হচ্ছে। সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপ যদি সত্যি ইউক্রেনের পক্ষে থাকতো, যতো দ্রুত সম্ভব আর্টিলারি ইউক্রেনকে সরবরাহ করতো। কোনভাবে ইউক্রেন ব্যর্থ হলে ন্যাটো আর রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছেন সামরিক বিশ্লেষকরা। যে কারণে ২০২৪ সালের যুদ্ধের কয়েকটা মাসকে খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।