কনসার্ট চলাকালীন সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন দেশটির সাধারণ মানুষ। আহত আরও দেড় শতাধিক মানুষ এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে ক্রেমলিন।
এদিকে ক্রোকাস সিটি হলে লাগা আগুন গত রাতে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তদন্তকারী সংস্থা জানায়, ৬ হাজার আসনবিশিষ্ট হলটিতে কনসার্ট উপভোগ করতে ধারণক্ষমতার বেশি মানুষ জড়ো হয়েছিল। বন্দুকধারীদের গুলি ছাড়াও আগুন, ছাদ ধসে এবং দম বন্ধ হয়েও অনেকে মারা গেছেন।
হামলার দায় স্বীকার করে একটি বিবৃতি দিয়েছে আইএস। তাদের পরিচালিত সংবাদমাধ্যম আমাক-এ মুখোশ পরা চারজনের ছবি প্রকাশ করে সংগঠনটি। বিবৃতিতে জানানো হয়, মেশিনগান, পিস্তল, ছুরি, বোমা ও দাহ্য পদার্থ নিয়ে হামলা চালানো হয়। আইএস এবং ইসলামবিরোধী দেশগুলোর মধ্যে চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষিতে এ হামলা করে তারা।
হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে দোষীদের কঠিন শাস্তি দেয়ার কথা বলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি জানান, হামলাকারীরা পালিয়ে ইউক্রেনে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করেছিল। চার অস্ত্রধারীসহ ১১ জন জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির গোয়েন্দা বাহিনী।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, সব অপরাধী, পরিকল্পনাকারী এবং আদেশদাতা সবাইকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। তারা যেই হোক না কেন, যারাই তাদের নির্দেশ দিক, কাউকেই ছাড়া দেয়া হবে না। যারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই সন্ত্রাসী হামলার প্রস্তুতি নিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেয়া হবে।
ক্রেমলিনের দাবি, আটক চারজনের কেউ রাশিয়ার নাগরিক নয়। হামলাকারীরা গাড়িতে করে ঘটনাস্থল থেকে পালানোর পর মস্কো থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে তাজিকিস্তানের কয়েকটি পাসপোর্ট, পিস্তল ও স্বয়ংক্রিয় রাইফেল উদ্ধার করা হয়। যদিও তাজিকিস্তানের নাগরিকদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মস্কোতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ। হামলাকারীদের মদদদাতা, অর্থদাতা ও পৃষ্ঠপোষকদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ। পুতিনকে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাশিয়ার জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, সৌদিআরবসহ বিভিন্ন দেশ নিন্দা জানিয়েছে।