পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে নাটকীয়তা যেন শেষই হচ্ছে না। দেশটির রাজনীতির চিত্র পাল্টাচ্ছে প্রতিদিনই। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি এখনও। কমিশনার লিয়াকত আলীর ভোট কারচুপির ঘোষণায় নতুন মোড় নেয় আন্দোলন। নির্বাচনে জালিয়াতির সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান বিচারপতির নাম উঠে এসেছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে দেশটির মানবাধিকার কমিশন। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে তদন্তের দাবি জানায় সংস্থাটি।
রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এর ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এ কথা জানায় ইন্টারনেট পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান নেটব্লকস। তাদের অভিযোগ, নির্বাচনে কারচুপির প্রতিবেদন ছড়িয়ে পড়ায় এমন উদ্যোগ নেয় পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ। এর আগে নির্বাচনের দিন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছিল।
নির্বাচনে ভোটচুরির অভিযোগে পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশন ও প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে ইমরান খানের দল পিটিআই ও তাদের মিত্রদলগুলো। বেলুচিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ থেকে মুক্তির জন্য দাবি জানিয়েছে।
পিটিআই সমর্থকরা বলেন, ‘নির্বাচনে জনগণের রায়ের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।’
আরেকজন বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, এবারের নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। সঠিক ফলাফলের জন্য সবাই একসঙ্গে বিক্ষোভ করছি।’
পাকিস্তানের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো দল। জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নিজেদের আসনসংখ্যা বাড়াতে এবার সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। সেই সঙ্গে ভাগাভাগি হবে নারী ও সংখ্যালঘুদের সংরক্ষিত আসন। তাদের নিয়ে কেন্দ্র, পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুন খাওয়ায় সরকার গঠনের প্রচেষ্টায় পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
এদিকে কেন্দ্র সরকার গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি। বিলাওয়াল ভুট্টো ও নওয়াজ শরীফের দল এক হয়ে প্রথমে বিদায় করে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্রদের। এরপর নিজেদের বুঝাপড়া নিয়ে দফায় দফায় বৈঠকে বসে এই দুই দল। জোট সরকার গঠনে নানা ফর্মূলা সামনে এলেও এখনও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি কেউ।
পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, ভোটের দিন থেকে ২১ দিনের মধ্যে নতুন পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন ডাকতে হয়। আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরকার গঠনের সব প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।