বিদেশে এখন
0

গাজায় মানবিক সহায়তায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস

২৩ লাখ বাসিন্দাদের জন্য এই প্রস্তাবকে অপ্রতুল বলছে হামাস

এক সপ্তাহ ধরে ঝুলে থাকার পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হলো গাজায় পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পাঠানোর প্রস্তাব। ফলে উপত্যকাটিতে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে আর কোনো ধরনের বাঁধা থাকলো না। ১৩-০ ভোটে পাস হওয়া প্রস্তাবটিতে ভোটদানে বিরত ছিলো যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া।

সংযুক্ত আরব আমিরাত এক সপ্তাহ আগে প্রস্তাবটি উত্থাপন করলেও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কথা উল্লেখ থাকায় এর আপত্তি জানায় যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের ভেটো এড়াতে কয়েক দফায় ভাষা পরিবর্তন করে যোগ করা হয়েছে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির অবস্থা তৈরির আহ্বান। প্রস্তাবটিকে ফিলিস্তিনের অসহায় মানুষের মাঝে আশার আলো হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।

জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলেন, 'প্রস্তাবটিকে ঠিক করতে আমাদের অনেক দিন সমঝোতা করতে হয়েছে। কিন্তু আজ নিরাপত্তা পরিষদ অকল্পনীয় দুর্ভোগের সাগরের মাঝে আশার আলো দিয়েছে।'

তবে প্রস্তাবের ভাষা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে রাশিয়া ও আরব আমিরাত। মস্কো জানায় ভাষা পরিবর্তনের মাধ্যমে ইসরাইলকে দেয়া হয়েছে সামরিক অভিযান চালানোর বৈধতা।

জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, 'গাজায় যুদ্ধ বন্ধ কার্যকরের প্রস্তাবকে পরিবর্তনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র তাদের মুখোশ উন্মোচন করেছে। এর মাধ্যমে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হত্যার লাইসেন্স পেয়েছে ইসরাইল। শত্রুতা বন্ধের শর্তটি যুক্ত করতে আমি পরিষদকে আহ্বান জানাচ্ছি।'

গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার জন্য প্রস্তাবটিকে অপ্রতুল বলেছে হামাস। এদিকে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে ইসরাইল বাঁধা তৈরি করছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতিসংঘ প্রধান।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস বলেন, 'আসল সমস্যা হলো গাজায় মানবিক সহায়তা সরবরাহে বড় বাঁধা তৈরি করছে ইসরাইল। একটি কার্যকর মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজন জাতিসংঘ কর্মীদের নিরাপত্তা।'

জাতিসংঘে প্রস্তাব পাশের মধ্যেই গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। শুক্রবার উপত্যকাটির নুসেইরাত শরনার্থী শিবিরে আকাশ হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। আহতদের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। খালি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে গাজায় মধ্যাঞ্চলের ১৫ শতাংশ এলাকা। জাতিসংঘের তথ্যমতে এলাকাটিতে বাস ৬১ হাজার মানুষের। অভিযান অব্যাহত আছে পশ্চিম তীরেও।

শিশুদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের সংগঠন ইউনিসেফ জানিয়েছে, অপুষ্টিতে ভোগা গাজার ১০ হাজার শিশুর জীবন হুমকির মুখে। খাদ্য সংকটের কারণে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে আরো প্রায় ৩ লাখ মা ও শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় ক্রমাগত দুর্ভিক্ষ বাড়ার কথা পুনর্ব্যাক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।