জেরোম পাওয়েল বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ফেডের ২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি থাকলেও, এখনো আমরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। পাশাপাশি মার্কিন অর্থনীতি যেহেতু শক্তিশালীভাবে এগোচ্ছে, তাই ফেডকে সাবধানতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সুদহার কমানোর ক্ষেত্রে কোনোভাবেই তাড়াহুড়ো করা হবে না।
অর্থনীতিবিদরা আশা করছিলেন, ফেডারেল রিজার্ভ চলতি বছরের সেপ্টেম্বর ও গত সপ্তাহে সুদহার কমানোর পর ডিসেম্বরেও আরো একবার সুদহার কমানোর ঘোষণা দিতে পারে। তবে তা জেরোম পাওয়েলের বক্তব্যের পর অনিশ্চিত হয়েছে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ফেড জানিয়েছিল, তারা ২০২৫ সালে চারবার সুদহার কমানো হতে পারে। কিন্তু সিএমই ফেডওয়াচের তথ্যানুসারে, ওয়াল স্ট্রিট ট্রেডার্সরা মাত্র দুইবার সুদহার কমানোর আশা করছেন। এদিকে ফেড চেয়ারম্যান বক্তব্যের পর, ডিসেম্বরে সুদহার কমানোর সম্ভাবনা ৫৯ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।
মূলত ফেডের নির্ধারিত বেঞ্চমার্ক সুদহার মর্টগেজ রেট, কার লোন ও ক্রেডিট কার্ডসহ পুরো অর্থনীতিতে ঋণের গ্রহণের প্রবণতাকে প্রভাবিত করে থাকে।
এদিকে প্রত্যাশিত মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মতো বিষয়গুলোও দীর্ঘমেয়াদি সুদহার অপরিবর্তিত রাখা বা বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। যেমন সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর ট্রেজারি ইল্ড বা দীর্ঘমেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার বেড়েছে, যা থেকে বোঝা যায় বিনিয়োগকারীরা আগামী বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি উচ্চ মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা করছেন। এটি মূলত ট্রাম্প প্রস্তাবিত শুল্কনীতি ও গণ নির্বাসন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে হতে পারে।
জেরোম পাওয়েল আরো জানান, অক্টোবরে মার্কিন মূল্যস্ফীতি ২ দশমিক ৬০ শতাংশে ছিল। মূল্যস্ফীতি আগামী কয়েক মাস ফেডের ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার উপরে থাকতে পারে, তবে তিনি বিশ্বাস করেন এটি ধারাবাহিকভাবে কমে আসবে।
ফেড স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালনার প্রসঙ্গে জেরোম পাওয়েল প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন, কভিড মহামারির পর মূল্যস্ফীতি কমানোর মূল চাবিকাঠি ছিল ফেড সুদহার নিয়ন্ত্রণ। তিনি বিশ্বাস করেন ফেড সময়ের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে মার্কিন মূল্যস্ফীতি কমাতে সক্ষম হবে। তবে এ আলোচনায় তিনি নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্কনীতি ও নির্বাসনের পরিকল্পনার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। —এপি প্রতিবেদনের অবলম্বনে