প্রযুক্তি সংবাদ
তথ্য-প্রযুক্তি
ইউরোপে প্রথমবার জরিমানার মুখে অ্যাপল
যুক্তরাষ্ট্রের টেক জায়েন্ট অ্যাপলকে ১৮০ কোটি ইউরো জরিমানা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। অ্যাপলের বিরুদ্ধে অন্যান্য ব্যবসায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগ এনেছে সুইডিশ মিউজিক স্ট্রিমিং প্রতিষ্ঠান স্পটিফাই। প্রথমবারের মতো ইউরোপে জরিমানার মুখে পড়লো কোম্পানিটি।

৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউরোপে ব্যবসা করছে টেক জায়ান্ট অ্যাপল। কর্মসংস্থান তৈরি করেছে প্রায় আড়াই মিলিয়ন ইউরোপবাসীর। এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ম ভাঙার দায়ে ১৮০ কোটি ইউরোর বিশাল জরিমানা গুণতে হলো জনপ্রিয় এই কোম্পানিকে। এ ঘটনায় একদিনের ব্যবধানে অ্যাপলের শেয়ারমূল্য কমেছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ।

২০১৯ সালে অ্যাপলের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে সুইডিশ মিউজিক স্ট্রিমিং সেবা স্পটিফাই। অ্যাপলের বিরুদ্ধে স্পটিফাইসহ প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যান্য কোম্পানির সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে বাঁধা তৈরির অভিযোগ উঠে। অ্যাপল মোবাইল ব্যবহারকারীদের কাছে স্পটিফাই নিজেদের পরিষেবা সম্পর্কে জানাতে পারছিল না। ফলে বেশি অর্থ ব্যয় করে অ্যাপলের মিউজিক স্ট্রিমিং সেবা নিতে বাধ্য হন ব্যবহারকারীরা।

ইউরোপীয় কমিশন জানায়, অ্যাপল প্রভাব খাটিয়ে অ্যাপের ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। এখানে ইউরোপীয় গ্রাহকদের পছন্দ করার স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়। যা অবৈধ এবং কয়েক লাখ ইউরোপীয় গ্রাহকদের ক্ষতি করেছে।

ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা বিষয়ক কমিশনার মার্গারেথ ভেস্টেগার বলেন, 'এক দশক ধরে অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে মিউজিক স্ট্রিমিং অ্যাপস বিতরণে একতরফাভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে অ্যাপল। বিকল্প মাধ্যম এবং তুলনামূলক কম খরচে সংগীতসেবা পেতে ভোক্তারা বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন। যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ম বহির্ভূত।'

এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অ্যাপল। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তাদের কার্যক্রমে গ্রাহকদের ক্ষতি হয়েছে এমন বিশ্বাসযোগ্য কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি কমিশন। এরপরও তারা জরিমানা করেছে, যা অবাস্তব। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবে অ্যাপল। তবে, আদালতে মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অ্যাপলকে জরিমানা পরিশোধ করতে হবে। পাশাপাশি মানতে ইইউর সব নির্দেশনা।

এর আগে ২০২১ সালে ডেটা অ্যাপ সরবরাহকদের দায়ের করা মামলার সময় অ্যাপলের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনা হয়। তখন মার্কিন এই টেক জায়ান্টকে এমন কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয় অ্যান্টিট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ। ইউরোপের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে বিবেচিত লুক্সেমবর্গভিত্তিক জেনারেল কোর্টের এমন সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে বিশ্বের বৃহত্তম মিউজিক স্ট্রিমিং অ্যাপ স্পটিফাই।

বড় টেক কোম্পানিগুলোর বেআইনি কাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এর আগে ইউরোপীয় কমিশনের অ্যান্টিট্রাস্টের নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে গুগলকে প্রায় আড়াই বিলিয়ন পাউন্ড জরিমানা করা হয়। অনলাইনে বিজ্ঞাপন বাজারকে প্রভাবিত করার অভিযোগে মেটাকেও জরিমানা করে ইইউ।

এমএসআরএস