লোভে পড়ে লাগেজ বাণিজ্যে জড়াচ্ছেন মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসী বাংলাদেশিরা!

প্রবাস
0

মধ্যপ্রাচ্যের সাধারণ প্রবাসীদের টার্গেট করে লাগেজ বাণিজ্য বেশ পুরোনো। কখনো বিমানের টিকিট, কখনো আর্থিক লেনদেন। বিনিময় অসাধু চক্রের মালামাল এয়ারপোর্ট পার করে দেন প্রবাসীরা। সামান্য টাকার লোভে এ পথে পা বাড়িয়ে প্রায়ই জেল-জরিমানাসহ বড় ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় তাদেরকে।

উন্নত জীবনের আশায় কাজের তাগিদে বিদেশে পাড়ি জমান বহু স্বপ্নবাজ মানুষ। ঈদ ও বিভিন্ন উৎসব-পার্বনে বছরের বিভিন্ন সময় ছুটিতে দেশে ফেরেন প্রবাসীরা। তবে, দেশে ফেরার সময় সাধারণ ও নিম্ন আয়ের কিছু প্রবাসীকে টার্গেট করে অসাধু চক্র।

দেশে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে কখনো টিকিটের মূল্য পরিশোধ; আবার কখনো দশ থেকে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সাধারণ প্রবাসীদের কাজে লাগায় চক্রগুলো। প্রবাসীদের লাগেজ ভর্তি করে পাঠানো হয় স্বর্ণ, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন মালামাল। এছাড়া খাবার প্যাকেটের নাম করে দেশ থেকে ফেরার পথে ওষুধ, মাদকদ্রব্যসহ কাস্টমস নিষিদ্ধ বহু পণ্যও তুলে দেয়া হচ্ছে প্রবাসীদের লাগেজে।

জানা গেছে, স্বর্ণের দামের উপর নির্ভর করে এভাবেই চলে চক্রগুলোর অবৈধ লাগেজ বাণিজ্য। অর্থের লোভে অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের এই ফাঁদে সবচেয়ে বেশি পা বাড়াচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে থাকা প্রবাসীরা।

একজন প্রবাসী বলেন, ‘যারা এখানে স্বর্ণের ব্যবসা করে মূলত তারাই এই কাজগুলো করে থাকে। ওরা সবসময় যাত্রীদের জন্য অপেক্ষায় থাকে।’

এসব পণ্য বহন করতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনছেন নিম্ন আয়ের প্রবাসীরা। মুখোমুখি হচ্ছেন জেল জরিমানা ছাড়া আরও বড় শাস্তির। দিন দিন এ ধরনের ভুক্তভোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানরত প্রবাসী খন্দকার ফয়সাল বলেন, ‘যাদের আয় কম, জরুরি বাড়ি যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। আরেকজনের জিনিসপত্র বহনের বিনিময়ে অনেকে টাকা দেয়, অনেকে টিকেট কেটে দেয়। এইজন্যই , তারা এই কাজগুলো করে থাকে।’

বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই ও উত্তর আমিরাত কনসাল জেনারেল মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘প্রবাসী ভাই-বোনদের কাছে অনুরোধ থাকবে, তারা যেন অপরিচিত মানুষের জিনিসপত্র বহন না করে। খুব যদি জরুরি প্রয়োজন হয় তাহলে যেন জিনিসগুলো ভালো করে দেখে নেন যে ভেতরে কী আছে।’

জানা গেছে, আমিরাত থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটমুখী ফ্লাইটের যাত্রীরা এই ফাঁদে পা দিচ্ছেন হরহামেশা। বিশেষ করে বাংলাদেশি ফ্লাইটগুলো এসব চক্রের প্রধান টার্গেট। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রবাসীদের সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ বাংলাদেশ মিশন ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুবাই ও উত্তর আমিরাতের ম্যানেজার সাকিয়া সুলতানা রিজিওনাল বলেন, ‘অনেক সহজ-সরল যাত্রীই হয়ত জানেনা যে ব্যাগের ভেতরে কী আছে, কিন্তু মালামাল নিয়ে গেছে এবং সমস্যায় পড়েছে। আমরা চাই আপনারা যেন এই ধরনের সমস্যায় না পড়েন এবং কাস্টমস এর যেগুলো নিয়মকানুন আছে তা মেনে চলেন।’

প্রবাসীরা বলছেন, নানা কায়দায় এক দেশের বিমানবন্দর পার হলেও অন্যদেশের ইমিগ্রেশনে আটক হচ্ছেন এ ধরনের যাত্রীরা। এতে ক্ষুণ্ন হচ্ছে দেশের ভাবমূর্তি। তাই সামান্য আর্থের লোভে কিংবা আবেগের বশে অন্যের মালামাল বহন থেকে বিরত থাকার আহ্বান সচেতন প্রবাসীদের।

এসএইচ