বিদেশের মাটিতে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার প্রসঙ্গ উঠলে সবার আগে আসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের নাম। দেশীয় সব উৎসব-উদযাপন ঘিরে বাঙালিদের মিলন মেলায় রূপ নেয় এই শহর। যেন এক টুকরো বাংলাদেশে। মেলে দেশি মাছ, নানা পদের খাবার, জামাকাপড় থেকে শুরু করে হরেক রকম দেশীয় পণ্যও। বাঙালি এলাকাগুলোয় হুট করে যে কেউ ঢুকে পড়লে প্রথম দেখায় হয়তো মনেই হবে না, এটা মার্কিন মুলুক!
নির্মাতা হাসান ইমাম চৌধুরী টিংকু বলেন, ‘এখানে একুশে ফেব্রুয়ারি, বইমেলা হয়। এছাড়া যেকোনো বাংলা বই ও পত্রিকা চাইলে পাওয়া যায়।’
গেল কয়েক দশকে অনেক নামি-দামি ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে এসে এই নিউইয়র্কে স্থায়ী হয়েছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি গড়ে তুলেছেন সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা বিকাশকেন্দ্র ও বিভিন্ন সংগঠন। শেকড়ের টানে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষও যোগ দিয়েছেন সেখানে। শুধু নিউইয়র্কই নয়, পাশের অঙ্গরাজ্য নিউজার্সি পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে বাংলার ঐতিহ্য। ধীরে ধীরে গোটা যুক্তরাষ্ট্রেই ছড়িয়ে পড়ছে বাংলার প্রচলন। এখানে নতুন প্রজন্মের বিষয়েও বেশ সচেতন অভিভাবকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা নিউইয়র্ক রেজা আবির বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যখন এখানে এসেছি তখন মনে হয়েছিল সবই এখানে মার্কিনিদের মতো হবে, কিন্তু যখন জ্যাকশন হাইডস আসলাম তখন আমি অনেক গর্বিত বোধ করি, যখন দেখি এখানে সবাইকে বাংলা ভাষায় কথা বলছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের মঞ্চ নাট্যকর্মী রুবেল শঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় এক চতুর্থাংশ বা এক সপ্তমাংশ বাংলা ভাষায় কথা বলে। বাংলা ভাষী হিসেবে এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।’
দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীরাও এখানে বড় ভূমিকা রেখে চলেছেন। নিউইয়র্কের নগর পরিকল্পনা দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২শ ভাষাভাষী মানুষের বসবাস এই নগরীতে। এখানকার বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যালট পেপারে ইংরেজির পাশাপাশি থাকে চারটি ভিন্ন ভাষা। যার মধ্যে একটি বাংলা। এমনকি বাংলায় রয়েছে এখানকার বেশ কয়েকটি সড়কের নামও।