পরিবেশ ও জলবায়ু
দখল-দূষণে মৃতপ্রায় ধলেশ্বরী
বৈশাখের শেষ সময়েও পানি শূন্য টাঙ্গাইলের ধলেশ্বরী নদী। কোথাও ধু ধু বালুচরে আবার কোথাও নদীর বুকে ফসল ফলাচ্ছেন স্থানীয়রা। জলবায়ু পরিবর্তনের এই বিরূপ প্রভাবে বিপন্ন প্রায় নদী পাড়ের জীববৈচিত্র্য। এদিকে ধলেশ্বরী খননের প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ওমরপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস। চলতি মৌসুমে শুকিয়ে যাওয়া ধলেশ্বরী নদীর মাঝে এক বিঘা জমিতে করেছেন বোরো আবাদ। ফলনও হয়েছে ভাল। তার মতো হাজারো কৃষক ধান আবাদ করেছেন নদীর প্রায় ৯ কিলোমিটার এলাকায়। তবু, স্বস্তি নেই তাদের মনে। জানান, অস্তিত্ব হারানো ধলেশ্বরীর জন্য তাদের হাহাকারের কথা।

কৃষক আব্দুল কুদ্দুস। ছবি: এখন টিভি

কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, 'বর্ষায় নতুন পানি আসতো নৌকা চালাতাম। কিন্তু এখন সাদা বালু। ফসল ফলানো হচ্ছে এখানে।'

নদীতে পানি না থাকায় নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য। এছাড়া নদী ঘিরে রয়েছে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নদীর গুরত্ব অপরিসীম। খননের মাধ্যমে ধলেশ্বরীকে তার পুরনো রূপে ফিরিয়ে আনার দাবি সচেতন মহলের।

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'উজানে যদি যমুনার সাথে সংযোগ হয় তাহল আমাদের ধলেশ্বরী নদী প্রাণ ফিরে পাবে। এটিকে রক্ষা করতে হলে নদীর আগের অবস্থা ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পানি যখনই আসুক না কেন নদীর গতিপথ ঠিক রাখতে হবে।'

ধলেশ্বরী নদী খননে নানা উদ্যোগের কথা জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন। 

টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, 'নদী খনন করার জন্য আমরা হেড অফিসে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছি। অনুমোদন হলে খনন কাজ শুরু হবে।'

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম বলেন, 'যদি এখানে নদী খনন করলে স্থানীয় মানুষের উপকার হবে তাহলে আমরা দ্রুত সময়ে মধ্যে খনন কাজ শুরু করবো।'

ধলেশ্বরীর মতো বংশাই, লৌহজং, এলেংজানি, ঝিনাইসহ জেলার অন্তত ৮ নদী দখল-দূষণে খালে পরিণত হয়েছে।

ইএ