পরিবেশ ও জলবায়ু
0

বিশ্বের অর্ধেক প্লাস্টিক দূষণে দায়ী ৬০টি কোম্পানি

বিশ্বের অর্ধেক প্লাস্টিক দূষণের পেছনে দায়ী ৬০টি ফার্ম। গবেষণা প্রতিবেদন বলা হয়, যেভাবে প্লাস্টিকের উৎপাদন বাড়ছে, সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্লাস্টিক দূষণ। দ্য ফাইভ গিরিস ইনস্টিটিউট বলছে, প্লাস্টিক দূষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে নেসলে, পেপসিকো, কোকাকোলার মতো কোম্পানি।

স্বেচ্ছাসেবীদের একটি আন্তর্জাতিক দল ৮৪ টি দেশ থেকে গেলো ৫ বছরে ১৮ লাখ ৭০ হাজার প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে। বেশিরভাগই একবার ব্যবহৃত হয় এমন প্লাস্টিক, যা ব্যবহার করা হয় খাবার, কোমল পানীয় আর তামাকজাত পণ্য প্যাকেটজাত করতে। এরমধ্যে অর্ধেকেরও কম প্লাস্টিক কোম্পানি ফিরিয়ে নেয়, বাকিগুলোর কোনো দায়িত্বই কোনো প্রতিষ্ঠান নেয় না।

স্টকহোম সহনশীলতা কেন্দ্রের গবেষণা বলছে, প্লাস্টিক উৎপাদন কে করছে, সেটা কারও অজানা নয়, কিন্তু কেউ দায়িত্ব নিতে চায় না। এই প্লাস্টিকগুলো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের পণ্যের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পৌঁছায়। এরমধ্যে অল্ট্রিয়া আর ফিলিপ মরিস ২ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্যের জন্য দায়ী, ডানোন আর নেসলে উৎপাদন করে ৩ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য, পেপসিকো ৫ শতাংশ আর কোকাকোলার প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ ১১ শতাংশ।

সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করলে, পেপসিকো জানায়, পুনর্ব্যবহার করা যায় এমন প্লাস্টিক দিয়ে ২০২৫ সালের মধ্যে শতভাগ পণ্য প্যাকেটজাত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা। নেসলে জানিয়েছে, গেলো ৫ বছরে একবার ব্যবহার করা যায় এমন প্লাস্টিকের ব্যবহার প্রায় ১৫ শতাংশ কমিয়ে এনেছে তারা। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পদক্ষেপ নিলেও উল্লেখযোগ্যহারে কমছে না প্লাস্টিকের ব্যবহার।

২০০০ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্লাস্টিকের উৎপাদন বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। যেখানে মাত্র ৯ শতাংশ প্লাস্টিক পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করা হয়। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর করা গবেষণা বলছে, এক শতাংশ প্লাস্টিকের উৎপাদন বাড়লে সঙ্গে সঙ্গে এক শতাংশ প্লাস্টিক দূষণ বাড়ছে। তবে এই গবেষণায় নেই চীন, কোরিয়া আর জাপানের প্লাস্টিক দূষণের তথ্য কিংবা পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের ভবিষ্যৎ কোনো পদক্ষেপ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর কোম্পানিগুলো ৪০ কোটি টন প্লাস্টিক উৎপাদন করছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব যখন জলবায়ু পরিবর্তন, ক্ষতিগ্রস্ত জীববৈচিত্র্য আর দূষণের সঙ্গে লড়ছে, সে সময় প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে নেই সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা। এখনই সচেতন না হলে বিশ্বকে চরম সংকটের মুখে ফেলতে পারে প্লাস্টিক, এমন আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

যদিও হোটেলে শ্যাম্পু প্যাকেটজাত করার ছোট বোতল আর মুদিপণ্যের জন্য প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে একটি আইন পাশ হয়েছে ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই নীতির এখনও অনুমোদন প্রয়োজন ইইউ দেশগুলোর কাছ থেকে। পরিবর্তন আসতে পারে খাদ্য ও পানীয় প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান আর রেস্টুরেন্টের প্যাকেজিংয়ে।

২০৩০ সাল থেকে ইইউতে নিষিদ্ধ হবে ফল, সবজি, মুদিপণ্য, রেস্টুরেন্টের খাবার আর ছোট কসমেটিকস পণ্যে প্লাস্টিক প্যাকেজিংয়ের ব্যবহার। ২০২৯ সালের শুরু থেকে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের বোতল আর ক্যান সংগ্রহ করা হবে প্রতিবছর।

এসএস