বাজেটের সংবাদ
বাজেট ২০২৪-২৫
0

মোবাইলে কথা বলার খরচসহ বাড়ছে সিম কার্ডের দাম

নতুন প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে যেসব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তার মধ্যে অন্যতম মোবাইলে কথা বলার খরচ ও সিম কার্ডের দাম। এছাড়াও রেফ্রিজারেটর, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের দামও বেড়েছে। অপরদিকে পণ্যের যেমন দাম বেড়েছে তেমনি কিছু পণ্যের দাম কমেছেও। গতকাল (বৃহস্পতিবার, ৬ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে নতুন প্রস্তবিত এ বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

নতুন বাজেটে যখন লক্ষ্যমাত্রা বড় করা হলো তখন চলমান খাতগুলোর ওপরেই নতুন করে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বাড়তে পারে পণ্যের দাম। রাজস্ব প্রণোদনাও কমে যাবে বেশি কিছু খাতে।

বাজেট প্রস্তাবনায় কিছু পণ্যের শুল্ক ও কর হারে পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তাই বেশকিছু পণ্যের দাম বাড়বে বিপরীতে কমবে অল্প কিছু পণ্যের দাম।

প্রতিবছরের মতো এবারও সিগারেটের উৎপাদন পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক ও মূল্যস্তর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে সিগারেটের দাম বাড়তে পারে। বাড়বে জর্দার দামও।

মোবাইলে কথা বলার খরচসহ এবার বাড়ছে সিম কার্ডের দামও। সিমকার্ডে কর ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা হতে পারে।

সম্প্রতি তীব্র তাপপ্রবাহে মধ্যবিত্ত পরিবারও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র কেনা বাড়িয়েছে। কিন্তু বাজেটে এই পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে শূন্য শতাংশের পরিবর্তে সাড়ে সাত শতাংশ, রেফ্রিজারেটর পাঁচ শতাংশের পরিবর্তে সাড়ে সাত শতাংশ মূল্য সংযোজন কর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

আইসক্রিম ও কোমল পানীয়র জন্য আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে। সব ধরনের আইসক্রিমে শুল্ক পাঁচ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব এসেছে। আর কার্বোনেটেড বেভারেজে সম্পূরক শুল্ক হার পঁচিশ থেকে বাড়িয়ে ত্রিশ শতাংশ করা হচ্ছে।

এবার বাজেটে ঘরগৃহস্থালীর অনেক পণ্যেরই বাড়ছে দাম। ১ থেকে ৫০ ওয়াটের এলইডি বাল্বের মূসক পাঁচ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আম থেকে তৈরি হওয়া আমসত্ত্ব বেশ জনপ্রিয়। একইসাথে আম, আনারসের জুসও অনেকের প্রিয়। হালে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পেয়ারা ও তেঁতুলের জুসও। তবে এবার উৎপাদন পর্যায়ে এসব পণ্যের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব এসেছে।

দাম বাড়ার বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমার খরবও দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে অন্তত ২৭ অত্যবশ্যকীয় নিত্যপণ্যে উৎসে কর কমিয়ে ১ শতাংশ করা হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে- পেঁয়াজ, রসুন, মটর, ছোলা, চাল, গম, আলু, মসুর, আদা, হলুদ, শুকনা মরিচ, ডাল, ভুট্টা, ময়দা, আটা, লবণ, গোলমরিচ, এলাচ, দারচিনি। তাতে স্বস্তি বাড়বে নিত্যপণ্যের বাজারে।

ল্যাপটপ আমদানিতে কর কমানো হচ্ছে। বিদ্যমান শুল্ক-কর ৩১ থেকে কমিয়ে ২০.৫০ শতাংশে আনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বাজেটে। কমবে ডেস্কটপ পিসিও। এই পণ্যের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যখাতেও সুসংবাদ মিলছে এবারের বাজেটে। কমবে ডেঙ্গু কিট, ডায়ালাইসিস ফিল্টার ও সার্কিটের দাম। তাতে ডেঙ্গু ও কিডনির চিকিৎসা খরচ কমবে।

গুঁড়ো দুধের ওপর ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব এসেছে নতুন বাজেটে। আরও যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে তার মধ্যে আছে চকলেট, বিদেশি পোশাক, এয়ারক্রাফট ইঞ্জিন, ইলেকট্রিক মোটর, এয়ারক্রাফট প্রপেলার, মিথানল, স্পাইনাল নিডল, মাশরুম ও শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল ম্যাঙ্গানিজ।

অর্থনীতিবীদরা বলছেন, নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়নোই এই বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। যদিও ব্যবসায়ীরা মনে করেন, গেলোবারের চেয়ে এবার এনবিআর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আরও বড় চ্যালেঞ্জ হবে।

নতুন এই বাজেটে যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে- তার বেশিরভাগই সাধারণ থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষেরও অতিপ্রয়োজনীয়- আর উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমাতে যেসব পদক্ষেপ এসেছে বাজেটে- তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিশেষজ্ঞদের।

ইএ