অর্থনীতি , আমদানি-রপ্তানি
বিশেষ প্রতিবেদন
0

ভোমরা বন্দরে ১১শ' কোটি টাকার প্রকল্পে ধীরগতির অভিযোগ

সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দরে রূপান্তরে ১১শ' কোটি টাকার প্রকল্পে ধীরগতির অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৫৭ একর জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ একর জমি অধিগ্রহণসহ অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ শুরু হয়েছে। প্রত্যাশা- প্রকল্পের কাজ শেষ হলে বদলে যাবে ভোমরা বন্দরের চিত্র।

১৯৯৬ সালে ১৫ এপ্রিল মাত্র ১৬টি পণ্য আমদানির অনুমতি নিয়ে এলসি স্টেশন হিসেবে যাত্রা শুরু করে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর, যা পূর্ণাঙ্গ রূপ পায় ২০১৩ সালে। ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির মুখে, এ বছরের ২৯ আগস্ট এই বন্দর দিয়ে গুঁড়ো দুধ ছাড়া সব পণ্য আমদানির অনুমতি দেয় এনবিআর। এরপর থেকেই বন্দরে বাড়ছে আমদানি-রপ্তানি।

ভোমরা বন্দর থেকে ভারতের কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৪০ কিলোমিটার। এজন্য অল্প সময় ও খরচে পণ্য পরিবহনের সুযোগ থাকায় আমদানি-রপ্তানিতে এই বন্দরটি গুরত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ব্যবসায়ীদের কাছে।

এখান দিয়ে আগে পেঁয়াজসহ কিছু কাঁচাপণ্য ও পাথর আমদানি হলেও এখন আলু, চালসহ নতুন নতুন পণ্যের আমদানি বেড়েছে। সেই সাথে বাড়ছে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলও। তবে বন্দরটিতে এখনও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় এই সুযোগ ঠিকমতো কাজে লাগতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস দরকার, একটা পুলিশ ফারি দরকার এখানে।’

আরেকজন বলেন, ‘এখানে যেন পেঁয়াজ, আদা আনা যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’

গুরুত্ব বিবেচনায় ভোমরা স্থলবন্দরের সম্প্রসারণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে ১১শ' কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর আওতায় বন্দর অধিগ্রহণ করা হবে ৬৭ একর জমি, যার মধ্যে ১০ একর অধিগ্রহণ করা হলেও বাকিটা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।

ব্যবসায়ীদের আরেকজন বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণ হয়েছে কিন্তু এখনো কোনো কার্যক্রম হয়নি। তারপরে আমাদের পার্কিং যেখানে সেখানে ভালু ভরাট হচ্ছে সেখানেও কাজের ধীরগতি রয়েছে।’

বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, বন্দরের ওয়ার হাউজ, শেড, ট্রান্সশিপমেন্ট ও পার্কিং ইয়ার্ড, আন্তর্জাতিক মানের প্যাসেঞ্জার টার্মিনালসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ হলে আমূল বদলে যাবে ভোমরা স্থলবন্দর।

আমদানিকারক দীপঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘১০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বাকি ৬০ একর জমি অধিগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।’

ভোমরা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবু হাসান বলেন, ‘এখন যে জায়গা আছে তাতে কিছু পণ্য বাড়িয়ে আমরা আমদানি করছি।’

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বরাদ্দের পুরো টাকা পেলে চলমান এই প্রকল্পের কাজ ২০২৬ সালের জুন মাসে শেষ হতে পারে। তখন বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় বাড়বে বলেও জানান কর্মকর্তারা।

সাতক্ষীরা ভোমরা স্থল বন্দরের উপ-পরিচালক মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘যেহেতু ভোমরা কাস্টমস হাউস হচ্ছে তাই এখানে জায়গা বাড়ানো ও বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন।’

ভোমরা স্থল বন্দরের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বন্দরের উন্নয়নের কাজে হাত দিয়েছে ভারতীয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

ইএ