নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে একটা বড় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে এবং সাম্প্রতিক সময়ের তুলনায় এটিকে বিপরীতমুখীই বলা যায়। যেমন ২০১৯ থেকে সবশেষ অর্থবছর পর্যন্ত যেখানে প্রতিবছরই তার আগের অর্থবছরের চেয়ে বেশি ঘাটতির লক্ষ্য নেয়া হয়েছে সেটি এবারে দেখা যাচ্ছে বিদায়ী অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা কম।
ঘাটতি পূরণের উৎস যেহেতু ঋণ কিংবা অনুদান সেহেতু ঘাটতি কম ধরায় আশা করা হচ্ছে সরকারকে নতুন অর্থবছরের জন্য ঋণও কম করতে হবে। বিদায়ী অর্থবছরে যেখানে ঋণ করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা, সেখানে নতুন অর্থবছরে এর চেয়ে আরও ৬ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা কম ঋণ নেবার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, নতুন এই নীতি কতটা ভালো অর্থনীতির জন্য?
দেশি কিংবা বিদেশি যে উৎস থেকেই ঋণ করা হোক, তাতে উভয় সংকট। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকার ঋণ নিলে বেসরকারি খাতের বিকাশ বাঁধাগ্রস্ত হয়, মূল্যস্ফীতি বাড়ে। আবার রিজার্ভের সংকটকালে বিদেশি ঋণ কিংবা সুদ পরিশোধ মরার ওপর খাড়ার ঘা। কিন্তু এটাও তো বলা হয়, অর্থনৈতিক রূপান্তরের পথে থাকা বাংলাদেশের জন্য ঘাটতি বাজেট খারাপ নয়?
প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেটে এবারও আয়ের সিংহভাগ ধরা হয়েছে রাজস্ব প্রাপ্তির মাধ্যমে, এটি প্রায় ৬৮ শতাংশ। বিদেশি অনুদান ১ শতাংশেরও কম। বাকিটা ঋণের মাধ্যমে। এবারের অর্থবছরেও সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে ৮ ভাগের ১ ভাগ, প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের প্রস্তাবের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বড় প্রকল্পগুলোর জন্য নেয়া বিদেশি ঋণ পরিশোধের সময় এসে যাওয়ায় সামনে ঋণ কিংবা সুদ পরিশোধের পরিমাণ আরও বাড়বে।