প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘২০২৫ সালের সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ নিয়ে মন্ত্রীসভার নীতিগত অনুমোদন একটি সুপরিকল্পিত ও বহুপাক্ষিক প্রয়াসের ফল। গত পনেরো মাসে প্রধান বিচারপতির কার্যালয় ও অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাহী শাখার পারস্পরিক সহযোগিতা এ প্রক্রিয়াকে গতিশীল করেছে, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই একটি পারস্পরিক দায়বদ্ধ সম্পর্কের মধ্যে আবদ্ধ। পারস্পরিকতা, যুক্তিনিষ্ঠতা ও একে অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার প্রবণতা পরিহার- এ তিন নীতিই বিচার বিভাগের স্বায়ত্তশাসনের স্থায়িত্বের মূল ভিত্তি হওয়া উচিত। অবিশ্বাস বা একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণের সামান্য ইঙ্গিতও বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতার স্থাপত্যকে বিপন্ন করতে পারে।’
প্রধান বিচারপতি মহোদয় তার বক্তব্যে বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ, বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা, এবং আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ন্যায়বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী নতুন বাস্তবতার আমরা এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতাকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে প্রশাসনিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ, নৈতিকভাবে সাহসী ও সাংবিধানিকভাবে শক্তিশালী বিচার বিভাগ বিনির্মাণ করতে হবে।
এসময় আইন বিভাগের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের আইন শিক্ষায় অবদান রেখে চলা আইন বিভাগের গৌরবময় যাত্রাকে সম্মান জানিয়ে আয়োজন করা হচ্ছে এই বৃহৎ পুনর্মিলনী। এখানে বিভাগের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা একই পরিসরে অতীতের স্মৃতিকে নতুন করে স্মরণ ও উদযাপন করতে মিলিত হবেন। এই মিলনমেলায় সংশ্লিষ্ট সবার উপস্থিতি আমাদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও উৎসাহব্যঞ্জক হবে।’
এর আগে সকালে আইন বিভাগে পতাকা উত্তোলন, বেলুন-ফেস্টুন উড়ানোর মধ্য দিয়ে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। অনুষ্ঠান উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি আইন বিভাগ থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি এস.এম. এমদাদুল হক, বিচারপতি এ.কে.এম আসাদুজ্জামান। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট ডিভিশনের ২৯ জন বিচারপতি, বিভিন্ন জেলার জেলা ও দায়রা জজ, আইনজীবী সহ বিভিন্ন পেশার প্রায় তিন হাজার সাবেক শিক্ষার্থী।





