মাদক বিরোধী অভিযানের ঘোষণায় ভেনেজুয়েলায় সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা তুঙ্গে। পাশাপাশি ২ সেপ্টেম্বর থেকে ক্যারিবিয়ান সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরেও মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে মার্কিন সেনারা। সবশেষ বৃহস্পতিবার ক্যারিবিয়ান সাগরে থাকা সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকায় আবারও হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এ হামলায় চারজন নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পেন্টাগন।
এ নিয়ে সন্দেহভাজন মাদকবাহী অন্তত ২০টির বেশি নৌযান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ওয়াশিংটন। সব মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা ৮০ ছাড়িয়েছে। এসব হামলা সশস্ত্র সংঘাতের আইন মেনে করা হচ্ছে বলে দাবি হোয়াইট হাউজের। তবে আইন বিশ্লেষকদের মতে, সন্দেহভাজন বা নিরস্ত্র ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে প্রাণঘাতী হামলা চালানো যুদ্ধাপরাধের শামিল। জাতিসংঘও এসব হামলাকে বিচার বহির্ভূত হত্যা অভিহিত করে অবিলম্বে তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:
জাতিসংঘ মহাসচিবের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য বলছে, লক্ষ্যবস্তু করা নৌকায় থাকা কোনও ব্যক্তিই অন্যদের জীবনের জন্য আসন্ন হুমকি বলে মনে হয় না। তাই আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে তাদের বিরুদ্ধে এভাবে প্রাণঘাতী সশস্ত্র শক্তি প্রয়োগের বৈধতা নেই। সমুদ্রে অবৈধ পাচার মোকাবেলার জন্য প্রতিষ্ঠিত আইন প্রয়োগের মাধ্যমে যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে ভেনেজুয়েলায় মাদক বিরোধী স্থল হামলা শুরুর হুমকির পর দেশটির ওপর নজর রাখতে ত্রিনিদাদে রাডার বসিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কার্যত ভেনেজুয়েলার ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে ওয়াশিংটন। দেশটির উপকূলের একেবারে কাছে মোতায়েন রয়েছে বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধজাহাজ। পুয়ের্তো রিকো ঘাটিতে রাখা হয়েছে অত্যাধুনিক যুদ্ধিবমান ও ড্রোন। ওয়াশিংটন-কারাকাসের মধ্যে চলমান উত্তেজনায় পুরো অঞ্চল জুড়ে বাড়ছে উদ্বেগ।
এমন পরিস্থিতিতে সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রস্তুত বলে পুনর্ব্যক্ত করেছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। এমনকি সার্বভৌমত্ব ও শান্তির প্রশ্নে চীনের সমর্থন অব্যাহত আছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেন, যদি আমাদের সশস্ত্র সংগ্রাম করতে হয় তাহলে তা হবে শান্তির জন্য, সার্বভৌমত্বের জন্য, মাতৃভূমির জন্য। ভূমি রক্ষার এই লড়াইয়ে কূটনৈতিক রাজনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে চীন প্রকাশ্যে সমর্থন করে। বেইজিং ভেনেজুয়েলার সার্বভৌমত্ব এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার অধিকারকে সমর্থন করে।
গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের ২০২৫ সালে করা সামরিক শক্তির তালিকা অনুযায়ী, সামরিক সক্ষমতার দিক থেকে বিশ্বে ১৬০টি দেশের মধ্যে ভেনেজুয়েলার অবস্থান ৫০তম। ব্রাজিল, মেক্সিকো এবং আর্জেন্টিনার মতো আঞ্চলিক শক্তির তুলনায় পিছিয়ে আছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে সামরিক সক্ষমতায় যে অনেক দুর্বল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।





