দুপুরে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন। প্রকাশিত এসএসসির ফলাফলে দেখা যায়, ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের পাসের হার ও জিপিএ- ৫ এর হিসেবেও এগিয়ে আছে মেয়েরা।
চলতি বছর পরীক্ষায় অংশ নেয় ৯ লাখ ৮৮ হাজার ৭৯৪ জন ছেলে এবং ১০ লাখ ২৪ হাজার ৮০৩ জন মেয়ে। ফলাফলে মোট উত্তীর্ণ ছাত্রের চেয়ে ৫৯ হাজার ৪৭ জন বেশি ছাত্রী পাস করেছে। এ বছর ছাত্রদের পাসের হার ৮১.৫৭ শতাংশ এবং ছাত্রীদের পাসের হার ৮৪.৪৭।
গড় পাসের পাশাপাশি জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতেও মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা পিছিয়ে রয়েছে। ২০২৪ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ৯৮ হাজার ৭৭৬ জন এবং ছাত্র ৮৩ হাজার ৩৫৩ জন। সে হিসাবে ছাত্রদের তুলনায় ১৫ হাজার ৪২৩ জন ছাত্রী বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এদিকে বিভাগ অনুযায়ীও মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগে ছেলেদের পাসের হার ৯৩.২৭ ও মেয়েদের পাসের হার ৯৪.০১ শতাংশ। মানবিক বিভাগে ছেলে ৭৩.১৫ ও মেয়ে ৭৯.১৬ শতাংশ। এছাড়া ব্যবসায় শিক্ষায় ছেলেদের ৮১.২৮ এবং মেয়েদের পাসের হার ৮৫.৮৪ শতাংশ।
এছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে (দাখিল) মোট পাসের হার ৭৯.৬৬ শতাংশ। এর মধ্যে ৭৮.৭০ শতাংশ ছাত্র এবং ৮০.৫৭ ছাত্রী। মোট জিপিএ- ৫ প্রাপ্তির সংখ্যা ১৪ হাজার ২০৬ জন। এর মধ্যে ছেলে ৬ হাজার ৭৩৯ জন ও মেয়েদের সংখ্যা ৭ হাজার ৪৬৭ জন।
এবার কারিগরি শিক্ষায় মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা এগিয়ে রয়েছে। তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে আবার মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। ফলাফলে দেখা যায়, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে চলতি বছর মোট পাসের হার ৮১.৩৮ শতংশ। এর মধ্যে ছেলে ৭৯.১৯ এবং মেয়েদের পাসের হার ৮৮.০৩ শতাংশ। মোট জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৪ হাজার ৭৮ জনের মধ্যে ছাত্র ১ হাজার ৯৩৭ এবং ছাত্রী ২ হাজার ১৪১ জন।
গত বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা এগিয়ে ছিল। ওই বছর সব শিক্ষাবোর্ডে ছাত্রদের চেয়ে ৩ দশমিক ৮১ শতাংশ ছাত্রী বেশি পাস করে। এছাড়া ৬ হাজার ১৩৫ জন ছাত্রী বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছে।
২০২৩ সালে ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে মেয়েদের পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং ছেলেদের ৭২ দশমিক ৯১ শতাংশ।
এদিকে মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা কেন পিছিয়ে রয়েছে সেটি খুঁজে বের করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলাফল উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ ও পাসের হারে ছেলেদের তুলনায় এগিয়ে মেয়েরা। শিক্ষায় ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের অংশগ্রহণ বেশি, ফলেও মেয়েরা এগিয়ে, এটি যেমন সুখবর। একইভাবে কেন ছেলেরা পিছিয়ে সেটির কারণ খুঁজে বের করতে হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। এবারের এসএসসি, দাখিল, এসএসসি (কারিগরি) ও দাখিল (কারিগরি) পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন মোট ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন। সারাদেশে ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩ হাজার ৭০০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।