পরিষেবা
অর্থনীতি

দুই মাসে ঢাকা-কক্সবাজার রেলে ১ লাখ যাত্রী পরিবহন

হাজেরা শিউলি
কক্সবাজার

ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালুর পর প্রথম দুই মাসে রেকর্ড পরিমাণ প্রায় এক লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে দু'টি ট্রেন। এ সময়ে আয় হয়েছে প্রায় ৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এই রুটে টিকিটের চাহিদা বাড়লেও তা পূরণ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

দুই পাশে পাহাড় , নদী ও বনবাদাড় পেরিয়ে জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য কক্সবাজারে ট্রেনে চড়ে ভ্রমণের মজাই আলাদা। নেই কোনো যানজটের বিড়ম্বনা কিংবা দীর্ঘ যাত্রাপথের ভোগান্তি।

শুধু ডিসেম্বর মাসে এই পথে ট্রেন ৬০ হাজার ৪০৪ জন যাত্রী পরিবহন করেছে । এতে রেল আয় করেছে প্রায় ৫ কোটি ১২ লাখ টাকা।

ব্যাপক সাড়া দেখে চলতি বছরের ১০ই জানুয়ারি থেকে এই রুটে দ্বিতীয় ট্রেন পর্যটন এক্সপ্রেস চালু করা হয়। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এই দুই মাসে দু'টি ট্রেনে ৯৯ হাজার ২৬৭ জন যাত্রী ঢাকা থেকে কক্সবাজার ভ্রমণ করেছেন। আর এ সময়ে রেলওয়ে আয় করেছে প্রায় ৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

কক্সবাজার রেল স্টেশনের মাস্টার বলেন, 'দু'টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে এবং গত ২০ তারিখে একটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করেছে। এ সব ট্রেনের কোনো সিট ফাঁকা ছিল না। সব টিকিট বিক্রি হওয়ায় আয় এখানে ১০০ শতাংশ। এছাড়াও যদি আরও ট্রেন চলাচল করে এখানে সবসময় টিকিট বিক্রি হবে।'

পূর্বাঞ্চলের ১৪টি আন্তঃনগর ট্রেনের মধ্যে ঢাকা-কক্সবাজার রুট বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক মনে করছে কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, 'যে দু'টি ট্রেন চলছে, তাতে যাত্রীদের অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি আমরা। ট্রেনে ঠিকমতো জায়গা দিতে পারছি না।'

এই ট্রেনের টিকিটের চাহিদা এতই বেশি যে টিকিট না পেয়ে প্রতিদিনই বেশ কিছু যাত্রী দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করছেন। একাধিক মোবাইলে চেষ্টা করে কেউ কেউ পাচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত টিকিট। এতে জরিমানাসহ এই রুটে প্রতিদিন রেলওয়ের বাড়তি আয় হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ।

এদিকে এই ট্রেনের জন্য চট্টগ্রামবাসী অনেক ত্যাগ স্বীকার করলেও এখনও চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুটে সরাসরি কোন ট্রেন চালু হয়নি। চট্টগ্রামের জন্য ট্রেন প্রতি ১১৫ আসন বরাদ্দ থাকলেও অনলাইনে টিকিট সিস্টেমের কারণে কোটা অনুযায়ী টিকিট পাচ্ছে না এ অঞ্চলের যাত্রীরা।

একজন যাত্রী বলেন, 'টিকিট পাওয়া খুব কঠিন। সরাসরি এখন থেকে টিকিট করা গেলে খুব উপকার হতো।'

কর্তৃপক্ষ বলছে ব্যাপক চাহিদা থাকলেও শুধু ইঞ্জিন সংকট ও সিগন্যালিং সিস্টেমের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় এই রুটে পর্যাপ্ত ট্রেন চালু করা যাচ্ছে না। তবে কয়েকদিনের সরকারি ছুটি ঘিরে কক্সবাজারমুখী যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে ৫ দিনের জন্য ৫টি স্পেশাল ট্রেন চালু করেছে কর্তৃপক্ষ। ইঞ্জিন পেলে মার্চ মাসে চট্টগ্রাম থেকে কমিউটার ট্রেন চালুর প্রত্যাশা রেলওয়ের।

মনিরুজ্জামান বলেন, 'চট্টগ্রাম থেকে একটা কমিউটার ট্রেন চলার কথা আছে। ইঞ্জিন স্বল্পতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। আশা করি খুব দ্রুতই আমরা ট্রেনটি চালু করতে সক্ষম হবো।'

২০২৩ সালে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল ১ কোটি ৮৮ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে। এ সময়ে আয় করেছে ৬৭২ কোটি ৩৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। কক্সবাজার রুটে আরও ৫টি ট্রেন চালু করা গেলে বছরে শুধু এই রুট অন্তত ১৫০ কোটি টাকা আয় হবে বলে প্রত্যাশা কর্তৃপক্ষের ।

এমএসআরএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর