সিরাজগঞ্জের রায়পুরে ১৯৬০ সালে ৭৫ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় নর্দান পিপলস জুট মিল। স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠানটিকে জাতীয়করণ করে নাম দেয়া হয় কওমি জুট মিল। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাসে ৫০ থেকে ৬০ টন পাট সংগ্রহ করে বিভিন্ন পাটজাত পণ্য উৎপাদন করা হত এই মিলে। যা দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রপ্তানি হতো দেশের বাইরেও।
এই মিলকে ঘিরে কর্মসংস্থান হয় প্রায় ৫ হাজার মানুষের। ফলে পরিবর্তন হয় এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার। কিন্তু দুর্নীতি আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ নানা কারণে লোকসানের মুখে ২০০৭ সালে উৎপাদন বন্ধ হয় কারখানাটি। ২০১১ সালে শ্রমিক কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে জাতীয় জুটমিল নামকরণ করে পুনরায় চালু করা হয় মিলটি। তবে পাট ক্রয়ে নানা জটিলতা ও ঋণে জর্জরিত হয়ে ২০১৯ সালে মিলটি আবারো বন্ধ করে দেয় সরকার। কর্মহীন হয়ে পড়ে মিলে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা।
পরবর্তীতে সরকার মিলটিকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ২০ বছরের জন্য ভাড়া দিলে স্বল্প পরিসরে উৎপাদনে আসে মিলটি। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই আবারও বন্ধ হয়ে যায়। মিলটিকে পুনরায় চালুর দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে আসছে শ্রমিকরা। রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় মিলটি দ্রুত চালুর দাবি তাদের।
আমরা সিরাজগঞ্জবাসীর আহ্বায়ক সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘ছাব্বিশটি যে জুটমিল রয়েছে তা জাতীয়ভাবে পুনরায় চালু করার জন্য আমরা দাবি জানিয়েছি। সরকার আমাদের আশস্ত করেছে ৫ থেকে ৬ টি জুটমিল চালু করা হবে। যদি এ জুটমিল চালু হয়, তাহলে আমাদের কৃষকরা উৎপাদন করতে উৎসাহিত হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে।’
কর্তৃপক্ষ বলছে, সারাদেশে কয়েকটি জুট মিল চালুর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় বড় এই পাটকলটি দেখতে পারে আলোর মুখ, আশ্বাস মিল কর্মকর্তার।
সিরাজগঞ্জ জাতীয় জুট মিলসের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘এ মিল যদি আবার চালু হয় তাহলে এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থার পাশাপাশি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। ’
মিলটি পুনরায় চালু করে শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্টদের।