প্রায় ৩ বছর ধরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে ইউক্রেন। পুতিন সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে ১৮ হাজার কোটি ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আর সেই অর্থের পুকুর চুরিতে ব্যস্ত ইউক্রেন সরকার।
এবার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে খোদ দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভের বিরুদ্ধে। পশ্চিমা বেসরকারি দুর্নীতিবিরোধী ওয়াচডগ অ্যান্টএসি'র অভিযোগের পরই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে জাতীয় দুর্নীতিবিরোধী ব্যুরো-এনএবিইউ। উমেরভের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অর্থ আত্মসাতে বাধা দেয়ায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ক্রয়সংক্রান্ত সংস্থা ডিপিএর প্রধানকে বেআইনিভাবে চাকুরিচ্যুত করেছেন তিনি।
২০২২ সালে ন্যাটো স্ট্যান্ডার্ডের আদলে প্রতিষ্ঠা করা হয় ডিপিএ। স্বাধীন এই সংস্থাটি প্রতিরক্ষা খাতের কেনাকাটায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে। অ্যান্টি করাপশন ওয়াচডগের অভিযোগ, কারসাজির মাধ্যমে দাম বাড়িয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে অস্ত্র ও গোলা তৈরির চুক্তি দেয়া হতো। যা থেকে সুবিধা নিতেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। ডিপিএ প্রধান এ কাজে বাধা দেয়ায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ৩ থেকে ৬ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে উমেরভের।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে টালমাটাল ইউক্রেন। এদিকে পশ্চিমাদের সরবরাহকৃত অস্ত্রের সন্ধান মিলছে রাশিয়ার কালোবাজারে।
এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের জন্য সাময়িকভাবে সহায়তা বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে স্থায়ীভাবে ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থন হারাতে পারে জেলেনস্কি সরকার।
অধ্যাপক, ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ইস্টার্ন নরওয়ের অধ্যাপক ড. গ্লেন ডিজেন বলেন, ‘অস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রের সম্মুখসারিতে পৌঁছাচ্ছে না। বরং সহায়তার অস্ত্র কেনা-বেচা হচ্ছে। এ বিষয়গুলো ট্রাম্প আগেও জানিয়েছিলেন। এসব কারণে ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চিরতরে বন্ধ হতে পারে।’
এর আগে ২০২৩ সালে সামরিক বাহিনীতে খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর কারসাজিতে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পদত্যাগ করেন তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যালেক্সি রেজনিকভ। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য বলছে, দুর্নীতির সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে ইউক্রেনের অবস্থান ১০৪ তম।