বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের অন্যতম প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প। কোভিড মহামারী, বিশ্ববাণিজ্যে নেতৃত্ব দেয়া দেশগুলোর যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার প্রভাব পড়ে দেশের পোশাক রপ্তানিতে। তবে নানা প্রতিকূলতার মাঝে সস্তা শ্রমের সুবাদে সংকট কাটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছে এই খাত।
এ বছর শুধু ফেব্রুয়ারিতে ৪৪৯ কোটি মার্কিন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। যা গেল বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পোশাক রপ্তানি ৩ হাজার ২৮৬ কোটি ডলারের। যা আগের বছরের এই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি।
তবে যাদের দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রমে এগিয়ে যাচ্ছে এ খাত, সেই শ্রমিকদের সঠিক পারিশ্রমিক সময়মতো দেয়া নিয়ে রয়েছে নানা সংকট। বিশেষ করে ঈদ এলেই উৎসব ভাতা পায় না কোন কোন কারখানার শ্রমিক। এছাড়া ঈদের ছুটিও দেরিতে হওয়ায় মহাসড়কে ঈদযাত্রায় দেখা দেয় চরম ভোগান্তি।
তাই কোরবানির ঈদকে ঘিরে শ্রম ভবনে গার্মেন্টস খাতের ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের ১৮তম সভা করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বৈঠকে বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ ইমপ্লোয়ারর্স ফেডারেশনের প্রতিনিধি ছাড়াও অংশ নেন শ্রমিক প্রতিনিধি হিসেবে ৬টি সংগঠনের নেতা। তুলে ধরেন তাদের কিছু দাবি ও সমস্যা।
জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, 'তাদের বেতন ভাতা দিয়ে শ্রমিকদের দিন যাপন করা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। তাই টিসিবির মাধ্যমে যাতে তারা খাদ্য সামগ্রী পায় তা ব্যবস্থা করা উচিত।'
বৈঠকে ঈদের আগেই সময়মতো বেতন ও উৎসব ভাতা পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। যানজট এড়াতে সমন্বিতভাবে ছুটি দেয়া হবে বলে জানান শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, 'মালিক পক্ষ স্বপ্রণোদিত হয়ে বলেছেন পুরো মাসের বেতন এবং বোনাস দিয়ে দেবেন এবং কোন শ্রমিক ছাটাই করবেন না। মহাসড়কে যানজট কমাতে সঠিক সময়ে কারখানা ছুটি দেবে।'
মূল্যস্ফীতির চাপে কষ্টে থাকা শ্রমিকদের জন্য টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতিও দিলেন প্রতিমন্ত্রী।
দেশে তৈরি পোশাক শিল্পে বর্তমানে বড়, মাঝারি ও ছোট- সব মিলিয়ে গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করছেন প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক।