জেলা শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কের পাশে বিসিক শিল্প নগরী। ২২ একর জায়গা জুড়ে ১৯৮১ সালে শুরু হয় শিল্প নগরীর কার্যক্রম। যেখানে গড়ে তোলা হয়েছে ১৩৩টি প্লট। এই প্লটগুলো বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪১টি প্রতিষ্ঠানকে। যার মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ২৮টি।
২২টি প্লটে ১৩টি ধান-চালের মিল থাকলেও যার ৯টি এখন বন্ধ। বাকি ৪টি চলছে ধুঁকে ধুঁকে। ফলে বেকার এখানকার তিন শতাধিক শ্রমিক।
শ্রমিকরা বলেন, 'এখানে যত মিল ফ্যাক্টরি ছিল সব মিলিয়ে আমরা তিন থেকে চারশো শ্রমিক কাজ করতাম। কিন্তু এখন তিনটি মিল চালু আছে, এর মধ্যে আমরা ৩০ জনের মতো লোক এখন কাজ করি।'
আরেকজন বলেন, 'বিসিকের মধ্যে কাজ নেই। আমরা গরিব মানুষ। কাজ না থাকলে আমরা কিভাবে চলবো?'
এখানে থাকা মাত্র দুটি ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান কুড়িগ্রাম জুট প্রসেসিং ওয়ার্কস এবং মা গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল মিলেও ঝুলছে তালা। কোনোমতে টিকে আছে ৪টি প্লটে থাকা ভাঙ্গারী প্লাস্টিক সামগ্রী প্রসেসিংয়ের কারখানা। এছাড়া সেচ নির্ভর বোরো আবাদের সময় লোডশেডিং, ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকেজো হয়ে পড়ায় জলাবদ্ধতা ও অতিরিক্ত আয়রনযুক্ত পানির সমস্যায় ভোগান্তিতে ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, '২২টি প্লট আছে। ১৩ টি মিল এর মধ্যে ৩ টা ধান ভাঙ্গা মিল চালু আছে।'
দীর্ঘদিন ধরে এখানে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার অবস্থা খুবই খারাপ। এর ফলে পানি জমে থাকে। বেশিরভাগ সময় লোডশেডিং থাকে।
স্থানীয় বিসিক কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতার কারণে জেলার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশ ঘটেনি বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। আর কর্মকর্তারা বলছেন, বিসিক সচলের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
কুড়িগ্রাম জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি সভাপতি মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, 'কুড়িগ্রাম জেলার শিল্প উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন লোকজনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু বিসিক শিল্প নগরীতে যারা শিল্প নিয়ে কাজ করছে তাদের এবং বিসিক শিল্প নগরীর কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণে আমরা আমাদের সমিতির লোকজন শিল্প উন্নয়নে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারছি না।'
কুড়িগ্রাম বিসিকের ডেপুটি ম্যানেজার শাহ মোঃ জুনায়েদ বলেন, 'বিদ্যুতের যে সমস্যা ছিল তা এখন আর নেই। আর যেসকল শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে তা চালু করার চেষ্টা চলছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।'
এদিকে কভিডকালে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় স্বল্প সুদে ৯৩ জন উদ্যোক্তাকে ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ঋণ দেয়া হলেও ১১ জন খেলাপি করেন। এছাড়া বিসিক নিজস্ব তহবিল থেকে ২ কোটি ৯০ লাখ টাকা ঋণ দেয়া হলেও ১৪ জন খেলাপি করেন।