ভুটান স্থলবেষ্টিত হওয়ায় দেশটিতে কোনো সমুদ্রবন্দর নেই। ফলে তৃতীয় দেশের মাধ্যমে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করতে হয়। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রসারে ২০২৩ সালের ২২ মার্চ ট্রানজিট চুক্তি ও প্রটোকল সই করে বাংলাদেশ ও ভুটান।
এই ধারাবাহিকতায় চুক্তি সইয়ের দুই বছর পর গত ২২ সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ড থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায় ভুটানের ট্রানজিট পণ্যের প্রথম পরীক্ষামূলক চালান। চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার ও বাংলাদেশের সড়ক পথ ব্যবহারের জন্য ভুটানকে তিনটি সংস্থাকে মাশুল দিতে হবে।
এক্ষেত্রে বন্দরের মাশুল আগেই নির্ধারণ করা থাকলেও কাস্টমস ও সড়ক পরিবহন বিভাগের টোল ও মাশুল নির্ধারণসহ অন্যান্য প্রক্রিয়ায় সময় লাগে প্রায় দুই মাস। এরই মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।
বন্দর থেকে পণ্য চালানটি খালাসের পর মঙ্গলবার বিকেলেই ভুটানের উদ্দেশে যাত্রার কথা রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে সড়ক পথে বুড়িমারি স্থলবন্দর হয়ে এটি পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দর প্রবেশ করবে। পরে ভারতের শিলিগুড়ি হয়ে যাবে ভুটান।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য হারবার ও মেরিন আহমেদ আমিন আব্দুল্লাহ বলেন, ‘প্রথম চালান, এটা আমাদের চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে আছে। আমরা বন্দর থেকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছি এটাকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য। কাস্টমসের ফরমালিটিজগুলো সম্পন্ন হয়ে আমাদের কাছে আসলে দ্রুততম সময়ে আমরা এটা ডেলিভারি দিতে পারবো।’
আরও পড়ুন:
এন এম ট্রেডিং করপোরেশন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহীদুল আলম খান বলেন, ‘অর্ডার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পণ্যের চালানটি এসে গেছে। এদিকের সব কার্যক্রমগুলো যদি আগেই হয়ে যেত, তাহলে আর দেরি হতো না।’
ভুটানের ট্রানজিট পণ্যের চালানের জন্য এরই মধ্যে সড়ক পরিবহনের টোল ও মাশুল বাবদ ২১ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে দেশটির আমদানিকারকের প্রতিনিধি। এর মধ্যে শুল্কায়ন প্রক্রিয়ায় কাস্টমস হাউসকে পরিশোধ করেছে ২ হাজার টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস উপ-কমিশনার এইচ এম কবির বলেন, ‘এ পণ্য চালানটা আমরা সর্বশেষ ২০ নভেম্বর টোল ও সড়কের মাশুল কত হবে এটা জানতে পারি এবং ১৭ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে এটার বিষয়ে আদেশ জারি করা হয়। তার প্রেক্ষিতে আমি শুল্কায়ন কার্যক্রম শুরু করি।’
পরীক্ষামূলক চালান পরিবহনে সফল হলে নিয়মিত পণ্য পরিবহন হবে। এতে শুধু আর্থিক লাভ কিংবা বাণিজ্যের প্রসার নয়, বন্দর ও সড়ক অবকাঠামোর সক্ষমতা বাড়াবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সেই সেঙ্গ বাংলাদেশ থেকে ভুটানে তৈরি পোশাক, ওষুধ, সিরামিক, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানির দ্বার খুলবে।
আহমেদ আমিন আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ট্রান্সশিপমেন্টের সঙ্গে আমাদের দেশ থেকেও বিভিন্ন পণ্য তখন যাওয়ার একটা সুযোগ তৈরি হবে। আমরা সেই সুযোগটা যদি নিতে পারি, আমরা ট্রান্সশিপমেন্ট এবং ম্যানুফ্যাকচারিং দুটাকেই যদি হাইলাইট করতে পারি, আমাদের জন্য এটা একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।’
থাইল্যান্ড থেকে এসব পণ্য আমদানি করেছে ভুটানের এবিট ট্রেডিং। আমদানি করা সাড়ে ৬ হাজার কেজি পণ্যের মধ্যে রয়েছে ফল, চকলেট, জুস ও শ্যাম্পু। চট্টগ্রাম থেকে তিন দিনে এটি পৌঁছাবে ভুটানে।




