ট্রাক ভর্তি করে কিংবা ছোট ছোট যানবাহনে লবণযুক্ত চামড়া আসতে শুরু করেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নাটোরের চকবৈদ্যনাথের আড়তগুলোতে। চামড়া আসার পর সেগুলো আনলোড করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা।
মূলত কোরবানি ঈদে ট্যানারি মালিকরা বছরের চাহিদার বেশিরভাগ চামড়া সংগ্রহ করে থাকেন। কিন্তু গেল কয়েক বছর ধরে রমজানের ঈদের পর গ্রাম-গঞ্জে গড়ে ওঠা মাংস সমিতি থেকে নাটোরের চকবৈদ্যনাথের আড়তগুলোতে চামড়ার সরবরাহ বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, কোরবানি ঈদে শতভাগ চামড়া সংগ্রহ হলেও ঈদুল ফিতরের ঈদে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ হচ্ছে। তাছাড়া উকৃষ্ট মানের চামড়া সরবরাহের পাশাপাশি দামও ভাল হওয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরা।
চামড়া ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, ‘এখন চামড়ার দাম ভালো, ন্যায্যমূল্যও পাচ্ছে গৃহস্থরা। এক হাজার সাতশ’ থেকে এক হাজার আটশ পর্যন্ত দাম উঠেছে।’
দেশের উত্তর এবং দক্ষিণ অঞ্চলসহ অন্তত ২১ জেলার কাঁচা ও লবণযুক্ত চামড়া আসে নাটোরের চকবৈদ্যনাথের চামড়ার আড়তে। ইতোমধ্যে নাটোরে এসে ঢাকার ট্যানারি মালিকরা চামড়া সংগ্রহ করতে শুরু করেছেন। তবে গেল কয়েকবছর ধরে ঈদুল ফিতরে ঈদে বেড়েছে চামড়ার আমদানির পরিমাণ। এবারও ৬০ থেকে ৭০ হাজার পিচ গরু এবং ৩০ থেকে ৪০ হাজার পিচ খাসিসহ অন্যান্য পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য ব্যবসায়ীদের।
নাটোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতি গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বলেন, ‘ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে যে পরিমাণে চামড়া আমদানি হচ্ছে আমাদের এখানে, তাতে আমরা আশা করছি ৬০ থেকে ৭০ হাজার পিচ গরু এবং ৩০ থেকে ৪০ হাজার পিচ খাসির চামড়া আমদানি হবে।’
দেশে উৎপাদিত চামড়াজাত পণ্যের অন্তত ৪০ শতাংশ রপ্তানি হয় চীনের বাজারে। এছাড়া দশ শতাংশ যায় স্থানীয় লেদার শিল্পে। বাকিটা যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, জাপান, পর্তুগালসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাড়ানোর কারণে দেশের চামড়া শিল্পে বড় ধরনের প্রভাব পড়ার শঙ্কায় ট্যানারি মালিকরা। এতে আগামী কোরবানি ঈদের প্রভাব পড়ার পাশাপাশি বাঁধাগ্রস্ত হতে পারে চামড়া রপ্তানি খাতও।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে যে বাণিজ্যিক যুদ্ধ চলমান, সেটার প্রভাব চামড়া ব্যবসাতেও পড়বে। সেক্ষেত্রে আমরা কোরবানির ঈদে ব্যবসা নিয়ে সন্দিহান।’
গেল কোরবানির ঈদে নাটোরের ব্যবসায়ীরা সাড়ে ছয় লাখ পিস গরুর চামড়া ও চার থেকে পাঁচ লাখ পিস খাসিসহ অন্যান্য চামড়া সংগ্রহ করেছিলেন।