আমদানি-রপ্তানি
অর্থনীতি

নানা প্রতিবন্ধকতায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার

নানামুখী জটিলতায় ভুগছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। দেশটিতে প্রবেশের সবশেষ সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে ৩১ মে। তবে কর্মী পাঠানো বন্ধ হবে না বলে আশ্বাস প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর। নতুন করে কোটা পেতে দেশটির সাথে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। প্রতিবছর লাখ লাখ কর্মীর কর্মসংস্থানের মাধ্যমে রেমিট্যান্সের যোগান আসছে দেশটি থেকে। গেল ৫ বছরে এসেছে কোটি ডলার।

তবে নানা ঘটনায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য বেশ কয়েকবার বন্ধ হয় মালয়েশিয়ার দুয়ার। অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সির চক্রের দায়ে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছিলো মালয়েশিয়ায়। ২০২১ সালে দেশটির সাথে পারস্পারিক সমঝোতা চুক্তির পর আবারও চালু হয় কর্মী পাঠানোর কার্যক্রম। ২০২২ সালের ৮ আগস্ট থেকে নিয়মিতভাবে কর্মী যাওয়া চলমান থাকলেও পরিস্থিতি পুনরায় দোলাচলে।

সম্প্রতি দেশটির নানা বাধ্যবাধকতায় কর্মী পাঠানো নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। নানা প্রতিবন্ধকতায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে হুমকির মুখে বাংলাদেশসহ ১৪টি কর্মী প্রেরণকারী দেশ। গেল ৩১ মার্চ কর্মীদের ভিসার আবেদন জমার তারিখ ঠিক করে দেয়া হয়। যাদের মালয়েশিয়ায় প্রবেশের শেষ সময় ৩১ মে। এরপর আর কোন কর্মী প্রবেশ করতে পারবে না।

এদিকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ইস্যুতে তৎপরতা বাড়িয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। যার অংশ হিসেবে সম্প্রতি একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তারা। যাতে মালয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুক কর্মীদের ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে বলা হয়।

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবারও বন্ধ হচ্ছে কি না? এমন প্রশ্নে আশঙ্কা উড়িয়ে দেন প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।

তিনি বলেন, 'মালয়েশিয়া সরকারকে চিঠি দিয়ে সময়সীমা বাড়ানোর আলোচনা চলমান আছে। আমরা এ ব্যাপারে কাজ করছি। প্রয়োজনে আমরা নিজেরা সেখানে যাবো। সরকার টু সরকার আলাপ হবে। মার্কেট ধরে রাখতে চেষ্টা করবো। তারা যেমন কর্মী চাইবে, আমরা তেমন দক্ষ শ্রমিক তৈরি করে পাঠাবো।'

পাশাপাশি অভিবাসন ব্যয় কমানোরও প্রতিশ্রুতি দেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, 'সরকার টু সরকার আলোচনা করে পাঠানো গেলে খরচ কম হয়। অন্যথায় মাইগ্রেশন খরচ অনেক বেশি হবে। কম খরচে পাঠানোই আমাদের লক্ষ্য।'

এদিকে বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে বিভিন্ন খাতে ১০ হাজার কর্মী পাঠানোর কথা থাকলেও রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন প্রতিষ্ঠান বোয়েসেল পাঠাতে পেরেছে মাত্র ১ হাজার ৩৮১ জন কর্মী। বিনা অভিবাসন ব্যয়ে সবশেষ ৭৩ জন কর্মীকে মালয়েশিয়ায় পাঠালেও তাদের কার্যক্রম চলে শ্লথগতিতে।

বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, 'যে কোম্পানি কর্মী গ্রহণ করে তাদের উপর কর্মী পাঠানোর বিষয়টা নির্ভর করে। আমরা যতগুলো চাহিদা পেয়েছি তা পূরণ করেছি। বাকি কোটাগুলো এখনো চলমান আছে।'

মালয়েশিয়ায় এখন কর্মরত আছেন প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী। তবে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও থেকে যাওয়া কর্মীর সংখ্যা নেহায়াত কম নয়।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর