৫-৬ বছর আগেও চট্টগ্রাম বন্দরে গড়ে এক থেকে দেড় হাজার টিইইউএস কনটেইনার পরিবহনকারী জাহাজ বেশি ভিড়তো। এসব জাহাজ লম্বায় বা দৈর্ঘ্যে ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ মিটার। ছোট আকারের জাহাজ বেশি আসায় বর্হিনোঙরে জট লেগে থাকতো। এছাড়া বেশি জাহাজ চালাতে জ্বালানি ও বাড়তি জনবল খরচের সঙ্গে জাহাজ প্রতি বন্দরের ট্যারিফ দিতে গিয়ে শিপিং কোম্পানিগুলোর খরচ বাড়তো।
এই প্রেক্ষাপটে টিকে থাকতে খরচ কমাতে ব্যবসার ধরন পরিবর্তন করে শিপিং কোম্পানিগুলো। বহর থেকে ছোট জাহাজ সরিয়ে যোগ করা হয় বড় আকৃতির জাহাজ। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে সবোর্চ্চ ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের আর ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়ছে। ফলে প্রতিটি জাহাজেই বেশি পণ্য পরিবহন সম্ভব হচ্ছে।
এমএসসি শিপিংয়ের (হেড অব অপারেশন অ্যান্ড লজিস্টিক) আজমীর হোসেন চৌধুরী বলেন, 'অতিমাত্রায় কনটেইনার লোড করার কারণে আমাদের খরচ কিন্তু কমে আসছে। যে কারণে আমাদর ফিডার ফেডটাও কিন্তু অনেক কম। সেটা যেমন মাদার ভেসেলের ক্ষেত্রে হয়েছে, একইভাবে সেটা ফিডার ভেসেলের ক্ষেত্রেও হয়েছে।'
আগে চট্টগ্রাম বন্দরে ছোট জাহাজ বেশি আসায়, জেটিতে জাহাজ বরাদ্দ দিতে বেগ পেতে হতো কতৃর্পক্ষকে। জেটি খালি না থাকলে বর্হিনোঙরে জাহাজগুলোকে অপেক্ষা করতে হতো। এতে পণ্য পরিবহনে সময় ও ব্যয় দুটোই বেশি লাগে।
চট্টগ্রাম বন্দরের পরিসংখ্যান বলছে, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৮ মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে ২ হাজার ৬৬৫টি জাহাজ ভিড়ে। অথচ এর আগের অর্থবছরে একই সময়ে ভিড়েছে ২ হাজার ৮৫৬টি জাহাজ। চলতি অর্থবছরে ১৯১টি জাহাজ কম ভিড়লেও এই সময়ে বন্দর আগের বছরের চেয়ে ১ লাখ ৪২ হাজার টিইইউএস বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মো সোহায়েল বলেন, ‘এবার জাহাজ কম ভিড়লেও কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডলিং বাড়ায় বন্দরের আয়ে তেমন প্রভাব পড়েনি।
বড় জাহাজে বেশি পণ্য পরিবহনের সুবিধা থাকায় খরচ কমেছে বলে মনে করেন বন্দর ব্যবহারকারীরাও। তবে এর সুফল পেতে কাস্টমসের শুল্কায়ন কার্যক্রমে সময় কমিয়ে পণ্য ডেলিভারি ব্যবস্থা আরো সহজ ও দ্রুত করার দাবি তাদের।
টি.কে গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের উপদেষ্টা মো. জাফর আলম বলেন, ‘কনটেইনার ডেলিভারির সহজ প্রক্রিয়া ব্যবসা-বাণিজ্যকে আরও উৎসাহিত করবে।’
২০২২-২৩ অর্থবছরে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের কোন প্রবৃদ্ধি না হলেও চলতি বছরে হ্যান্ডলিং বেশি হবে বলে প্রত্যাশা কর্তৃপক্ষের।