চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে লক্ষ্যমাত্রা থেকে রপ্তানি কমলেও বেড়েছে বৈধ পথে প্রবাসী আয়। তাই রপ্তানি বাড়ানো এবং নির্বাচনের পরেও রেমিট্যান্সের ধারা অব্যাহত রাখতে দ্ক্ষ জনশক্তি ও অর্থনৈতিক কূটনীতি তৈরিতে জোর দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
দেশে ডলারের মূল উৎস রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স। গেল বছর শেষে প্রবাসী আয়ে সুবাতাস বইতে শুরু করলেও গেল কয়েক মাসে রপ্তানি আয়ে সাফল্য মেলেনি। চলতি অর্থবছরের অক্টোবর-নভেম্বরের পর ডিসেম্বরেও কমেছে রপ্তানি আয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস পণ্য রপ্তানি বাড়লেও, পরের তিন মাসে ধারাবাহিকভাবে কমছে আয়। অক্টোবরে রপ্তানি কমেছে ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং নভেম্বরে কমেছে ৬ শতাংশ। সবশেষ ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় আগের বছরের তুলনায় কমেছে এক দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য বলছে, গত মাসে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৫৩০ কোটি ডলারের, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ কম। গত জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৭৫৪ কোটি ডলার। যা আগের অর্থবছরের প্রথমার্ধ থেকে মাত্র শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি। কিন্তু নির্ধারিত লক্ষ্যের চেয়ে সেটি ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ কম।
রপ্তানির এই ঘাটতি অর্থনীতির জন্য খুব বেশি শঙ্কার কারণ হবে না বলে মত- ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদদের। নির্বাচনের পর আয় বাড়াতে সম্ভাবনাময় রপ্তানি পণ্য ও নতুন বাজার খুঁজে বের করতে অর্থনৈতিক কূটনীতিতে দক্ষতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন তারা।
এবিষয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর আলম বলেন, ‘যেসব দেশে আমরা পণ্য রপ্তানি করে থাকি, সেসব দেশে নতুন বাজার খুঁজতে হবে।’
অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘গত ডিসেম্বর থেকে একটু কম, এটা আমি মনে করি না যে খুব একটা খারাপ। তবে সচেষ্ট হতে হবে, যাতে রপ্তানি আরও বাড়ানো যায়।’
রপ্তানি আয় যখন ডলারের যোগান বাড়াতে খুব বেশি সামর্থ্য দেখাতে পারছে না, তখন কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এগিয়ে এসেছে প্রবাসী আয়। গেল ডিসেম্বরেই রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ১৯৯ কোটি ডলার। গেল বছরের শেষ মাসের রেমিট্যান্স আগের তুলনায় ১৭ দশমিক ০৭ শতাংশ বেশি। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে সব মিলিয়ে এসেছে এক হাজার ৭৯ কোটি ডলার। প্রবাসী আয়ের এ প্রবাহ আগামীতেও অব্যাহত রাখতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও নীতির বাস্তবায়ন জরুরি বলে জানান বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘সরকারি নীতি আছে এদেশ থেকে দক্ষ লোকজন বিদেশে পাঠানো। কিন্তু সেদিকে যতটা তৎপর হওয়ার কথা সার্বিকভাবে ততটা তৎপর দেখা যায় না। তবে অনেক সময় দেখা যায় নীতি সঠিকভাবেই নেয়া হয়েছে কিন্তু বাস্তবায়ন হচ্ছে না।’
গেল বছরে ১৩ লাখের বেশি শ্রমশক্তি গিয়েছে দেশের বাইরে। এসময়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির দুয়ার খুললেও নতুন বছরে পূর্ব ইউরোপের দেশ রোমানিয়াসহ মাল্টা ও ইতালিতে কর্মী যেতে পারে বাংলাদেশ থেকে।