ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ কমেছে দেশের বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে। আমদানিকারকরা বলছেন, ডলারের দর ঊর্ধ্বমুখী থাকায় আমদানি কমিয়েছেন অনেকেই। এছাড়া রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল থাকাও আমদানি কমার বড় কারণ।
দেশে মসলা আমদানি হয় কলম্বিয়া, মাদাগাস্কার, গুয়াতেমালা, সিরিয়া, ভারতসহ অন্তত ১০টি দেশ থেকে। তবে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে। ভারতীয় মসলা বোর্ডের তথ্য বলছে, বছর ব্যবধানে দেশটি থেকে এলাচ আমদানি কমেছে অর্ধেকের বেশি। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ হাজার ২৬৮ টন এলাচ আমদানি হলেও, ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৫৯২ টনে।
আদার আমদানি কমেছে ৭০ শতাংশেরও বেশি। ২০২১-২২ অর্থবছরে যেখানে ১ লাখ ১২ হাজার টন আদা আমাদানি হয়। সেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে হয়েছে মাত্র ৩০ হাজার টন। প্রায় ১ হাজার টন কমেছে জিরার আমদানিও।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকটে শতভাগ মার্জিন দিয়েও ঋণপত্র খুলতে পারছে না মাঝারি ও ক্ষুদ্র আমদানিকারকরা। এছাড়া ডলারের বিপরীতে টাকার ক্রমাগত অবমূল্যায়নেও আমদানি কমিয়েছেন অনেকে।
খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি সোলায়মান বাদশা বলেন, ‘আমদানিতে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীদের আগ্রহ কমে গেছে। ডলারের দামের পার্থক্যে পণ্য আমদানি করে অনেকেই লোকসানে পড়েন।’
এ বছর কয়েকটি পণ্যের আমদানি বাড়লেও সার্বিক মসলা আমদানির চিত্র নিম্নমুখী। ২০২১-২২ সালে ভারত থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার টন মসলা আমদানি হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কমে দাঁড়ায় ২ লাখ ৮ হাজার টনে। এক বছরে আমদানি কমেছে ৩৭ হাজার টন।
খাতুনগঞ্জের মেসার্স আমেনা ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী নুরুল আজিম মুন্না বলেন, ‘এখানে বাজারটা আসলে পুরোপুরি ডলারের ওপর নির্ভর করে। মাঝে যে এলসি জটিলতা ছিলো সে কারণে পণ্যের সংকট রয়ে গেছে।’
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিও পর্যবেক্ষণ করছেন ভোগ্যপণ্য আমদানিকারকরা। হরতাল অবরোধের মত রাজনৈতিক অস্থিরতা পণ্য পরিবহন ও বিক্রিতে ঝুঁকি তৈরি করেছে। এতেও আমদানি কমেছে বহুলাংশে।
চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এহসান উল্ল্যাহ জাহেদী বলেন, ‘আগের থেকে ট্রান্সপোর্ট খরচ বহুগুণ বেড়ে গেছে। ঢাকা থেকে যে ট্রাক ৮-১০ হাজারে আসতো তাতে এখন ১৪-১৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।'
দেশে প্রতিবছর মসলার চাহিদা ৩৫ লাখ টনের বেশি। যার বাজারমূল্য প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।





