টানা একমাস ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আলোচনা-পর্যালোচনার একেবারে শেষ পর্যায়ে জাতীয় সংসদ। বাজেট পাসের একদিন আগে শনিবার ( ২৪ জুন) অর্থবিল ২০২৪ উত্থাপনের পাশাপাশি বাজেটের উপর সমাপণী আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলীয়, সংসদ নেতা ও অর্থমন্ত্রী।
বাজেটকে গতানুগতিক উল্লেখ করে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, ‘মহামারীর সময়ের চেয়েও খারাপ সময় যাচ্ছে অর্থনীতির। নিম্নমুখী রিজার্ভ যে কোনো সময় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।’
সরকারের কথা মানুষ আস্থায় নিতে পারছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ব্যক্তি পর্যায়ের সর্বোচ্চ কর যেখানে ৩০ শতাংশ, সেখানে কালো টাকা সাদা করতে নূন্যতম ৫০ শতাংশ কর আরোপ করা উচিত বলে সংসদে মত দেন জিএম কাদের।
তিনি বলেন, ‘একদিকে করচাপে মূল্যস্ফীতি বাড়ার শঙ্কা। অন্যদিকে বাজেটের ঘাটতি মেটাতে অতিরিক্ত ব্যাংক ঋণ নির্ভরতায় সংকুচিত করবে শ্রম বাজারকে। সবমিলিয়ে উভয় সংকটে সরকার।’
বিরোধী দলীয় নেতার পরেই বাজেট আলোচনায় অংশ নেন সংসদ নেতা ও সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘নতুন বাজেট প্রণয়নে সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার তুলে ধরা হয়েছে।’
আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এজন্য প্রয়োজন উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়ানো।’ এ সময় করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখ টাকা করায় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে শিল্পের মূলধনী যন্ত্রাংশের উপর ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া বাজেটের সমাপনী এই আলোচনায় কালো টাকা সাদা করার কারণ ব্যাখ্যা করেন সরকার প্রধান।
দুর্নীতি করে কেউ পার পাবে না বলেও সংসদে হুঁশিয়ারি উচ্চার করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘যে যতই চেষ্টা করুক, আর কখনো কেউ দেশকে পিছিয়ে দিতে পারবে না।’
পরে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ‘দেশের শিল্পায়ন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য।’
অধিবেশনের শেষভাগে অর্থবিল ২০২৪ পাসের জন্য উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।
বড় কোনো সংশোধনী ছাড়াই পাস হয় অর্থবিল। প্রত্যাহার করা হয় শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতিতে এক শতাংশ আমদানির শুল্কের প্রস্তাব।
নানা আলোচনা সমালোচনার মধ্যেই ১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ রাখা হয়েছে অর্থবিলে। এছাড়া আইনগত জটিলতার কারণে বাতিল হয়নি এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি সুবিধা।