আজ (বৃহস্পতিবার, ১৬ মে) বিআইডিএস ও ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত 'বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আগামীর করনীয়' শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা উঠে আসে।
২০১১-১২ অর্থবছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিলো ৪২ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। দশ বছর পর ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪০ কোটি টাকায়। মূলত খেলাপি ঋণ বাড়লে ব্যাংকগুলোকে এর বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন রাখতে হয়। মূলধনে চাপ ও ঘাটতি বাড়ায় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহে তারল্য সংকটের সৃষ্টি হয়।
ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, 'ঋণ খেলাপি-কর ফাঁকি-মুদ্রাপাচার একসূত্রে গাথা। ঋণ খেলাপিদের ছাড় বন্ধ করে খেলাপি ব্যাংক সংস্কার প্রয়োজন।'
তিনি বলেন, 'ঋণ খেলাপিদের সুবিধা দেয়া যাচ্ছে। বিশেষ ছাড়ের কারণে খেলাপি ঋণ কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। এ সুযোগে খেলাপিরা ৭ থেকে ৯ বার নিচ্ছে।'
আলোচনায় রাজনীতি ও অর্থনীতির দূরত্ব সংকট সৃষ্টি করছে বলে মনে করেন আলোচকরা। যেখানে জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত প্রয়োজন। একইসাথে আসন্ন বাজেটে কর ফাঁকি রোধ করার পরামর্শ দেন অর্থনীতিবিদরা।
সিপিডির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, 'ব্যাংকের ঋণ খেলাপি থেকেও শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ কম। শিক্ষা স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ কমিয়ে ভৌত অবকাঠামোতে বিনিয়োগ কর্মসংস্থান বাড়ালেও ভবিষ্যতে অবকাঠামো থাকবে, তা পরিচালনার জন্য দক্ষ জনশক্তি থাকবে না।'
অর্থনীতিবিদ এমএম আকাশ বলেন, 'মনিটরি ও ফিস্কেল পলিসির সমন্বয় প্রয়োজন, বাণিজ্য নীতিতে এক্সপোর্ট বিচিত্রতার কথা বললেও সেটি হচ্ছে না, আসন্ন বাজেটে গুরুত্ব দিলে এটি এগোনোর আশা করা যেতে পারে।'
একতরফা ভৌত অবকাঠামোতে বিনিয়োগ সামাজিক সূচকের সাথে বৈষম্য বাড়াচ্ছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। ফলে শিক্ষা স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ বাড়ানো ও আমদানি পণ্য যদি দেশে উৎপাদন সেখানে সমান প্রণোদনা প্রয়োজন।
ড. মসিউর রহমান বলেন, 'ব্যাংক সংস্কারের নীতি হলেও তা প্রয়োগের জটিলতা রয়েছে।'
বাজেটকে সামনে রেখে ও উন্নয়ন পরিকল্পনাকে সামনে রেখে পরিকল্পিত সমন্বয় করতে হবে বলে মনে করেন অর্থনীতি গবেষকরা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিনায়ক সেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ ওহাহি উদ্দিন মাহমুদ ও ড. শামস রহমান।