গেল দেড় দশকে আওয়ামী সরকারের আমলে দুর্নীতি আর কারসাজিতে ধ্বংস হয়েছে আর্থিক খাত। আর এর বড় ভুক্তভোগী হচ্ছে ব্যাংক খাত। যে খাত থেকে বিগত সরকারের লোকেরা পাচার করেছে ২৮ লাখ কোটি টাকার বেশি।
এতে দুর্বল হয়েছে ডজন খানেক ব্যাংক। এস আলম, নজরুল ইসলাম মজুমদার বা সালমান এফ রহমানের মত কিছু গোষ্ঠী ও ব্যক্তি স্বার্থে অনেক আইন হয়েছে। এতে খেলাপি ঋণ হয়েছে প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্যান্য খাতের সাথে শুরু হয় আর্থিক ও ব্যাংক খাত সংস্কার। এতে আমানতকারীদের আস্থা ফেরানো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানান বিশ্লেষকরা। রোববার বিআইবিএম আয়োজিত অনুষ্ঠানে একথা জানান তারা।
যারা ব্যাংক খাতের ক্ষতি করেছে তাদের শাস্তি না দিলে সংস্কার কোনো কাজে আসবে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ডিন ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম বলেন, ‘এ ব্যাংকিং খাতকে সামনে সুস্থ ধারায় ফিরিয়ে আনতে আমাদের কাজ করতে হবে।’
এছাড়া ২০১০ সালে উচ্চ শ্রেণির ৫ শতাংশের সাথে নিম্ন আয়ের ৫ শতাংশ মানুষের বৈষম্য ছিল ৩০ শতাংশ। যা আওয়ামী সরকারের আমলে ৮২ শতাংশ ছাড়িয়েছে বলে জানান এই বিশেষজ্ঞ।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইচ্ছাকৃত লোন এটা হচ্ছে চৌর্যবৃত্তি। এমপিএলের মধ্যে দুইটা ভাগ এভাবে দেখাও বোধ হয় ঠিক হবে না। একটা হলো এমপিএল আরেকটা হলো চুরি। এটা একটা ক্রাইম এবং এটাকে আমাদের ক্রাইম হিসেবেই দেখতে হবে। এবং আমাদের এমন ব্যবস্থা করতে হবে যাতে আগামীতে এটা করার সাহস কারো না হয়।’
এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমানতকারীদের আস্থা ফেরাতে না পারলে ব্যাংক খাতে আরো ক্ষতি বাড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ডক্টর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ডিপোজিটর, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ যদি আমরা না রাখতে পারি তাহলে একটা খাতের গভীরতা বা স্পিড অব প্রগ্রেস আমরা বলি সেটা হতে পারবে না।’
অর্থনীতিবিদরা বলেন, ভালো আর্থিক খাত ভালো রাজনীতি। আর ভালো রাজনীতি না হলে যেকোনো সরকারেরই ৫ আগস্টের মত অবস্থা হবে বলে জানান তারা।