আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের চতুর্থ কিস্তি আগামী ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। তাই কিস্তি ছাড়ের আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঋণের শর্ত পূরণের অগ্রগতি জানতে ও আর্থিক সংস্কারের পরামর্শ দিতে সংস্থাটির একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসে।
এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে বৈঠক করেছে তারা। রোববার সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন আইএমএফের দলটি। প্রথম দফায় দেড় ঘণ্টা বৈঠকের পর দলটি সচিবালয়ে যায়। এরপর দ্বিতীয় দফায় বিকাল চারটায় ফের বাংলাদেশ ব্যাংকে আসেন তারা।
দফায় দফায় বৈঠকে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা, আর্থিক খাতের পুনরুদ্ধার, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিবেদন তৈরির নতুন মানদণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে অতিরিক্ত তিন বিলিয়ন ডলার চাওয়া হয়েছে সে বিষয়ও উঠে আসে বৈঠকে। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, প্রতিনিধি দলটি ফিরে যেয়ে আইএমএফ বোর্ডকে জানানোর পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে কি পরিমাণ অর্থ মিলবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘এখান থেকে যেয়ে ওয়াশিংটনে রিপোর্ট করবে। তারা জানাবে আমাদের ওয়ার্ল্ড ব্যাংক কত দিচ্ছে, এডিবি কত দিচ্ছ ইউএসএইড কত দিচ্ছে। সবকিছু দেখবে, দেখে তারা একটা অ্যামাউন্ট ঠিক করবে যে, আমাদের কত দিবে।’
এদিকে নীতি সহায়তার জন্য ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে চায় বিশ্বব্যাংক। তবে এজন্য বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার ও সুবিধাভোগীদের সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করা, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা নির্ধারণসহ মানতে হবে চার শর্ত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘এই ডিসেম্বরে তারা এক বিলিয়ন ডলার দেবে। এর বাইরে তারা ২৫০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন, অ্যামাউন্ট এখনো ঠিক হয় নি, ওটা নিয়ে কাজ চলছে। মিশন আসছে, এর মধ্যে তারা ইনভেস্টমেন্ট প্রকল্প গ্রহণ করবে। এর আওতায় আমাদের ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
এছাড়া বাংলাদেশের বাতাসের মান উন্নয়নে ক্লিন এয়ার প্রজেক্টে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। এদিকে আইএমএফ বিশ্বব্যাংকের মতো ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনও অর্থনৈতিক খাতে সংস্কারে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ওরা কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দেয়ার ব্যাপারে অক্টোবরে যখন আমি যাব সে সময় আরো আলোচনা হবে। মোট কথা ওরা সব ব্যাপারেই ইতিবাচক। তবে আমাদের কিছু কাজ করতে হবে। ’
এখন পর্যন্ত তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে ২২৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ।