নিত্যপণ্যের দামে যখন অতিষ্ঠ সাধারণ ভোক্তা তখন সরকার বদলের পর পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে নতুন করে ভাবছেন সবাই। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা।
সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১৩টি অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যৌক্তিক মূল্যে নামিয়ে আনতে আলটিমেটাম দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।
সমন্বয়ক বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, 'বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে আমরা মূলত আল্টিমেটাম দিচ্ছি। আগামী এক সপ্তাহের ভেতরে যদি বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আপনারা জনগণের কাছে সন্তোষমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারেন, তাহলে আপনারা পদত্যাগ করবেন।'
এসময় বাজার নিয়ন্ত্রণে চাঁদাবাজি বন্ধ, দখলদারিদের দৌরাত্ম্য বন্ধসহ বেশ কিছু দাবি তুলে ধরে তারা।
বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, 'আমরা একটা সিন্ডিকেটকে তুলে দিয়েছি, কিন্তু এখন অনেকের মনে মনে এ ধরনের সিন্ডিকেট কাজ করছে যে, এখন সুযোগ আমরা একটু বসি। সুতরাং যারা মনে মনে চিন্তা করছেন যে, আপনার এভাবে মোড়ে মোড়ে সিন্ডিকেট করবেন রাস্তায়, আপনারা সাবধান হয়ে যান। ছাত্র-জনতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ভোক্তা অধিদপ্তরের সাথে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে শক্ত হাতে আপনারা এগুলো প্রতিরোধ করবেন।'
সভায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান জানান, শ্যামবাজার থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত পণ্য আসতে তিন জায়গায় চাঁদা দিতে হয়। বর্তমানে এসব চাঁদা বন্ধ হলেও বাজারে দাম কমেনি। জানান, বাজার সিন্ডিকেটের মূল হোতা করপোরেট গ্রুপগুলোর নৈরাজ্য বন্ধে শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করা হবে।
মহাপরিচালক বলেন, 'শ্যামবাজার থেকে একটা ট্রাক আসতে তিনটা পয়েন্টে চাঁদা দিতে হয়।গুলিস্তান পর্যন্ত একটা পয়েন্টে, সোনারগাঁ মোড়ে একটা আর কারওয়ান বাজারে ঢুকে একটা দিতে হয়। এই চাঁদাবাজি বন্ধ হলে দ্রব্যমূল্যে তার প্রভাব পড়বে। তাহলে কেন দাম কমছে না? তোমরা যদি আমাদের পাশে দাঁড়াও আমার মনে হয় আমরা যে বাংলাদেশ চেয়েছিলাম সে বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার চরম সুযোগ এসেছে।'
বাজার ব্যবস্থাপনার অনিয়ম ও অবৈধ সিন্ডিকেটের নথিপত্র ছাত্রদের হাতে তুলে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।