হবিগঞ্জে খাল খননের অর্ধেক কাজ করেই প্রকল্পের বাকি অর্থ লুট

এখন জনপদে
0

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে সাত কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে খনন করা হয়েছিল ঐতিহাসিক 'গড়ের খাল'। কিন্তু দেড় বছর না যেতেই খালের অস্তিত্বই প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ৩১ কিলোমিটারের খালের অর্ধেক খনন করেই শেষ দেখানো হয়েছে প্রকল্প। বাকি অর্থ করা হয়েছে লুট।

বানিয়াচংয়ের 'গড়ের খাল'। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সাত কোটি ১২ লাখ টাকায় মূল ও শাখা মিলিয়ে ৩১ দশমিক ৬ কিলোমিটার খাল পুনরুদ্ধার ও খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। লক্ষ্য ছিল সারাবছর খালের পানি ধরে রেখে কৃষি জমিতে সেচ দেয়া।

তবে খননের দেড় বছরেই দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র। পানি তো দূরের কথা, খাল খননের চিহ্নও খুঁজে পাওয়া কঠিন। এমন অবস্থায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তোলেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় একজন বলেন, 'অপরিকল্পিতভাবে খাল খননের কারণে এখন গড়ের খালের বেশিরভাগ জায়গায় পানি নেই। অসংখ্য জায়গায় ম্যাপ অনুযায়ী খাল খনন করা হয়নি।'

স্থানীয় অন্য একজন বলেন, 'আসল যে খালটি সেটি হচ্ছে এই খালের পশ্চিম দিকে আরও একটি খাল আছে সেটি। এইটা উনারা ব্যক্তিগতভাবে খনন করেছেন।'

তাদের দাবি, প্রধান খাল বাদ দিয়ে খনন করা হয়েছে অপ্রয়োজনীয় শাখা খাল। আর খনন করা মাটি খালের পাশে রাখায় বছর না যেতেই পুনরায় ভরাট হয়ে গেছে। প্রকল্পে খালের দুই পাশে চার হাজার গাছ লাগানোর কথা থাকলেও লুট হয়েছে সেই অর্থও।

হবিগঞ্জের একজন বলেন, 'খাল যে পজিশনে হওয়ার কথা ছিল, সেই পজিশনে খনন করেনি তারা। উনারা পানি থেকে জাল সাফ করে অল্প মাটি টেনে রেখে চলে গেছে।'

পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তার দাবি, নানা প্রতিবন্ধকতায় পুরো খাল খনন করা সম্ভব হয়নি। তবে ঠিকাদার ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করেছে, বিল দেয়া হয়েছে ৫৪ শতাংশ। বাকি টাকা ফেরত পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে।

হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, 'সাত কোটি ১৬ লাখ টাকার কন্ট্রাক ভ্যালু ছিল। পরবর্তীতে ঠিকাদার কাজ করার পরে তারা বিল পেয়েছে চার কোটি দুই লাখ। যেহেতু তারা কাজটি পুরোপুরি করতে পারেনি। আমরা মেজারমেন্ট করে যতটুকু পেয়েছি সেগুলোর উপরই আমরা বিল নিয়েছি।'

পৃথিবীর বৃহত্তম গ্রাম হিসেবে পরিচিত হবিগঞ্জের বানিয়াচং। গ্রামের চারপাশ ঘিরে ১৯ দশমিক দুই কিলোমিটারের খাল গ্রামের ঐতিহ্য। স্থানীয়দের কাছে যা 'গড়ের খাল' নামে পরিচিত।

এসএস