স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চরাঞ্চল আলোকবালীতে বালু ব্যবসা এবং স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে ঘিরে কাইয়ুম গ্রুপ এবং শাহ আলম গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ চলছিল। এরই জেরে, আজ (সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় শাহআলম গ্রুপের আঘাতে কাইয়ুম গ্রুপের সাদেক মিয়া নিহত হন, আহত হন দুই গ্রুপের অন্তত ১০ জন।
আহতরা নরসিংদীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং নিহতের মরদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উভয় গ্রুপের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও জড়িত রয়েছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের যৌথ অংশগ্রহণে দীর্ঘদিন যাবৎ এ এলাকায় দ্বন্দ্ব চলছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তার ও বালু উত্তোলনের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে শাহ আলম চৌধুরী ও আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এর জেরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ভোরে সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী ইদন মিয়া (৫৫) নিহত হন।
পরদিন ফেরদৌসী বেগম (৪২) নামে এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওই ঘটনায় কাইয়ুম মিয়া তার নিয়ন্ত্রণাধীন মুরাদনগর, বকশালীপুর, বাখরনগর ও বীরগাঁও গ্রামের প্রভাব হারান।
আরও পড়ুন:
এমন প্রেক্ষাপটে আজ ভোরে কাইয়ুম মিয়া পুনরায় চার গ্রামের দখল পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করলে প্রতিপক্ষ বাধা দেয়। এ সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সাদেক মিয়া নিহত হন।
এ বিষয়ে শাহ আলম চৌধুরী বলেন, ‘বালুখেকো, খুনি ও অপকর্মের দায়ে বহিষ্কৃত আব্দুল কাইয়ুম ও তার বাহিনী নিরীহ সমর্থকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। সে আওয়ামী লীগের দোসর ও তাদের সুবিধাভোগী। আমার দলে কোনো আওয়ামী লীগ কর্মী নেই, বরং কাইয়ুম আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মিলে একের পর এক খুন ও সন্ত্রাস চালাচ্ছে। বিষয়টি আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের জানিয়েছি।’
অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুল কাইয়ুম মিয়া বলেন, ‘ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসাদ উল্লাহ ও সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দিপুসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা করেছে। এখন পর্যন্ত আমার দু’জন কর্মী নিহত হয়েছেন। আসাদ উল্লাহ ও দেলোয়ার দিপুকে গ্রেপ্তার করলে এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে।’
নরসিংদী সদর থানার ওসি এমদাদুল হক নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।’
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ফরিদা গুলসানারা কবির বলেন, ‘আমাদের এখানে গুলিবিদ্ধ একজনকে আনা হয়েছে, যিনি মৃত। আহত অবস্থায় আরও কয়েকজনকে আনা হয়েছে।’





