আগামী এক মাসের মধ্যে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর তিন মাসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে বলে জানিয়েছেন আদালত। চুক্তির সব দিক তুলে আনতেও কমিটিকে বলেছে হাইকোর্ট।
২০১৭ সালে ৫ নভেম্বর আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবি চুক্তি করে। এই চুক্তি নিয়ে শুরুতেই অভিযোগ উঠে। সমালোচনা ছিলো চুক্তির ধরণ নিয়েও। ভারতে সরকারিভাবে বিদ্যুৎ আমদানি করা হয় প্রতি ইউনিট ৫ টাকা ৫ পয়সা করে। বেসরকারি খরচ পরে প্রতি ইউনিট ৮ টাকা ৫০ পয়সা। আর বাংলাদেশের আদানির কাছ থেকে বিদ্যুত কিনতে ইউনিট প্রতি খরচ পড়ে ১৪ টাকা। নেপাল থেকে কিনতে খরচও ৮ টাকা।
এসব বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে আদানির সঙ্গে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি পর্যালোচনা করার জন্য হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়।
মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি করে কয়েকটি আদেশ দেন। আদেশে উচ্চ আদালত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে জাতীয় স্বার্থে এই চুক্তিতে সমতা আনতে না পারলে কেনো বাতিল করা হবে না, সে বিষয়েও একটি রুল জারি করা হয়।
রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল কাইয়ুম বলেন, 'আদানি গ্রুপের সাথে অন্যায্য এবং অসম চুক্তিটা ন্যায্যতা এবং সমতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করে যেন পুনর্বিবেচনা করা হয় না হলে যেন বাতিল করা হয় এই মর্মে নির্দেশনা চেয়েছিলাম। আজতে হাইকোর্ট বিভাগ আমাদেরকে শুনেছেন রাষ্ট্রপক্ষকেও শুনেছেন শুনে একটা রুল ইস্যু করেছেন যে অসম এবং অন্যায্য বাংলাদেশের স্বার্থের পরিপন্থী এই চুক্তিটা বাতিল করার জন্য কেন নির্দেশনা প্রতান করা হবে না।'
রিটকারি আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল কাইয়ুম জানান, দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তির সব নথি এক মাসের মধ্যে হাইকোর্টে দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যায্য এই চুক্তিতে আদানির স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল কাইয়ুম বলেন, 'কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। সেখানের মধ্যে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ থাকবেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আইন বিশেষজ্ঞও থাকবেন যারা এই চুক্তিটির টার্মও এবং কন্ডিশন আমাদের দেশের স্বার্থের পরিপন্থি কী কী আছে সেগুলো বিশ্লেষণ করে আদালতের কাজ হচ্ছে দুই মাসের মধ্যে একটা রিপোর্ট জমা দিবেন।'
শুনানিতে হাইকোর্ট বলেন, যেকোনো চুক্তিতে আগে দেশের স্বার্থ। আর প্রতিবেশির সঙ্গেও ন্যায্যতার ভিত্তিতে সুসম্পর্ক রাখতে হবে।