জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর হত্যা, নির্যাতন ও সহিংসতার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সেই লক্ষ্যে নতুন করে আইনজীবী তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠন করা হয় প্রসিকিউশন টিম।
প্রায় এক মাস পর ট্রাইব্যুনালে সোমবার (১৪ অক্টোবর) তিন বিচারক নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। আজ (মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর) দুপুরে ট্রাইব্যুনালে আসেন নব নিযুক্ত চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। তার আগে আসেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ মোহিতুল হক এনাম।
নতুন বিচারকদের সঙ্গে প্রাথমিক বৈঠক করে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম। পরে সাংবাদিকদের প্রধান প্রসিকিউটর জানান, ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে জুলাই আগস্টে হত্যাকারীদের বিচারের পথ উন্মুক্ত হয়েছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মোটামুটিভাবে পূর্ণাঙ্গভাবে গঠিত হয়ে গেলো। আগামীকাল এজলাশে তারা প্রথম বসবেন। সেই এজলাশে দু'জন বিচারপতি এবং একজন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা জন পদমর্যাদার। যিনি ছিলেন তিনি এখন হাইকোর্টের পদমর্যাদা ভোগ করবেন। এই তিনজন বিচারককে বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যে সংবর্ধনা দেয়া হয় আদালত কক্ষে সেটা আমরা কাল তাদের দেবো। কালকে আর কোনো বিচার প্রক্রিয়া হবে না বলে তারা জানিয়েছেন। পরশুদিন কোর্ট স্বাভাবিক নিয়মে কোর্টে বসবেন। পরশুদিন হয়ত বিচারিক প্রক্রিয়াটা শুরু হবে।’
গেলো জুলাই-আগস্টে সহিংসতায় নিহত ও আহতদের পরিবার এবং বিভিন্ন সময়ে গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিরা অর্ধশতের বেশি মামলার অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছে। যা বিচার বিশ্লেষণ করছে তদন্ত সংস্থা।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘কে পালিয়ে গেছে আর কে যায়নি সেটা কোর্টে আমরা যখন ডিভিশন দাখিল করবো তখনই বোঝা যাবে। এবং সেক্ষেত্রে যদি দেখা যায় যে আসামি ভুক্ত হওয়ার পর কেউ পলাতক আছে তাদের ব্যাপারে আইনে বিধান আছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের প্রায়োরিটি হচ্ছে জুলাই আগস্টে সংগঠিত যে ম্যাসাকার, যে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে এবং যার প্রেক্ষিতে আমাদের এতো মানুষ জীবন দিয়েছে সেই বিচারটা সর্বাগ্রে শুরু হবে। সে বিষয়ে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞা আছি।’
মহান মুক্তিযুদ্ধে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। মুক্তিযুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা ও বুদ্ধিজীবী হত্যার মতো অপরাধের দায়ে জামায়াতের একাধিক শীর্ষ নেতার বিচার করা হয়। সেই একই ট্রাইব্যুনাল, একই আইনে হত্যা, গণহত্যার দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিচার কাজ শুরু হচ্ছে।