আজ (শনিবার, ২৯ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে বেলা পৌনে ১২টা পর্যন্ত উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া বাজার এলাকায় তিনটি স্থানে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, এ সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ২০টি বসতবাড়ি ভাঙচুর করা হয়, লুটপাট করা হয় গবাদি গশুসহ মালামাল।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জাহিদ মাতুব্বর ও নুরু মাতুব্বরের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। সম্প্রতি এ বিরোধের জেরে উভয় নেতার সমর্থকদের কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আরও জানা যায়, জাহিদ ও নুরু মাতুব্বর বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী সরকারের পতনের পর তারা উভয় নেতাই বিএনপিতে যোগ দিয়ে গট্টি ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন।
এরই ধারাবাহিকতায় মাঝে মাঝে একপক্ষ আরেক পক্ষের সমর্থকদের ওপর হামলা-পাল্টা হামলা চালিয়ে আসছে বলেও জানান এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন:
এরই জেরে শনিবার সকালে উভয়পক্ষের হাজারো সমর্থক দেশিয় অস্ত্র ঢাল, কাতরা, ভেলা, টেটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে এ সংঘর্ষ বালিয়া বাজার, কাঠিয়ার গট্টি গ্রাম ও বালিয়া গট্টি গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া গট্টি, আড়ুয়াকান্দী, ঝুনাখালি, মেম্বার গট্টি, ভাবুকদিয়া, সিংহপ্রতাব, গট্টি, কানুইর, দিয়াপাড়া, জয়ঝাপ, আগুলদিয়া, মোড়হাটসহ অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ অংশ নেন। এসময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আতঙ্কে এলাকার নারী ও শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করতে দেখা যায়।
জানা যায়, সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অন্তত ৩০ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের অন্তত ২০টি বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এর মধ্যে ওমর ফারুক নামে এক যুবকের ৫টি লুট করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয় বক্তব্য নেয়ার জন্য জাহিদ মাতুব্বর ও নুরু মাতুব্বরকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) কেএম মারুফ হাসান রাসেল বলেন, ‘সকাল থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পর বেলা পৌনে ১২টার দিকে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’





