কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ও খুরুশকুল ইউনিয়নকে আলাদা করেছে জোয়ারি খাল। খালের ওপর সেতু না থাকায় ছোট খেয়া নৌকায়ই যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। অথচ শহর থেকে মাত্র নয় কিলোমিটার দূরের এ পথ ঘুরে যেতে হয় ৩৬ কিলোমিটার।
তাই এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন একটি সেতু। ২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদন পায় ৩৯২ মিটার দীর্ঘ ভারুয়াখালী–খুরুশকুল সেতু প্রকল্প। দুই দফা দরপত্র আহ্বানের পর ২০২১ সালের জানুয়ারিতে নির্মাণকাজ শুরু করে তমা কনস্ট্রাকশন ও এম এ জাহের লিমিটেড। চুক্তি অনুযায়ী ৩৬ কোটি ২৮ লাখ টাকায় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। তবে দুই দফা সময় বাড়িয়েও কাজের অগ্রগতি আশানুরূপ নয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গ্রামে আসতে তাদের ২ থেকে ৩ ঘণ্টা সময় বেশি লাগছে। দুই তিনবার গাড়ি বদল করে আসতে হয়। সেতু বাস্তবায়ন হলে তাদের ১৭ কিলোমিটার রাস্তা কমে যাবে।
এলজিইডি বলছে, সেতুর ১৩টি স্প্যানের মধ্যে আটটি স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। তবে মূল খালের ওপর এখনো কাজ শুরু হয়নি। কাজের ধীরগতিতে হতাশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও।
আরও পড়ুন:
ভারুয়াখালী ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান বলেন, ‘বছরের পর বছর তিন চারজন লোক দিয়ে কাজ করানো হয়। এতো বড় ব্রিজে পাঁচ ছয়জন দিয়ে কাজ করালে বাস্তবায়ন হবে কোনো দিন? ওনাকে দ্রুত কাজ করার জন্য তাগিদ দেয়া হোক অন্যথায় তাকে বাতিল করে নতুন করে ঠিকাদার দেয়া হোক।’
প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেতুর একাংশে কাজ করছে মাত্র চারজন শ্রমিক। নির্মাণের ধীরগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আনিসুর রহমান কথা বলতে রাজি হননি।
অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কুমিল্লা পাঁচ আসনের সাবেক এমপি এম এ জাহের আত্মগোপনে যাওয়ার পর থেকেই প্রকল্পে স্থবিরতা নেমে এসেছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জমি অধিগ্রহণের জটিলতাও।
কক্সবাজার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন খান বলেন, ‘ঠিকাদারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। উনি পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।’
ভারুয়াখালী–খুরুশকুল সেতু এখন শুধু একটি প্রকল্প নয়। এটি হয়ে উঠেছে বিচ্ছিন্ন মানুষের একমাত্র ভরসা। দ্রুত কাজ শেষ করার মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হোক—এমনই প্রত্যাশা এ অঞ্চলের মানুষের।




