রাবনাবাদ নদের বালু উত্তোলনে বিপন্ন বাঁধ, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য-বসতি

রাবনাবাদ নদের বালু উত্তোলন
রাবনাবাদ নদের বালু উত্তোলন | ছবি: এখন টিভি
0

পটুয়াখালীর রাবনাবাদ নদ থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলনে বিপন্ন দুটি ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। হুমকির মুখে নদীর ভূ-প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং জনবসতি। অবৈধ বালু উত্তোলনে সরকারও হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব। এক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব তীব্র হচ্ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

জেলা প্রশাসন আন্ধারমানিক নদের মোহনার ১ কোটি ৭৪ লাখ টকার ‘খাজুরা বালুমহাল’ ইজারা দিয়েছে মাত্র ৬৮ লাখ টাকায়। একাধিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বৈধ এ বালুমহাল থেকে বালু উত্তোলন না করে, রাবনাবাদ চ্যানেল ও আগুনমুখা নদী থেকে বালু কেটে নিচ্ছে। এতে হুমকিতে পরেছে পরিবেশ। তীব্র নদী ভাঙ্গনে ডুবে-ভেসে জীবনযাপনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে অর্ধশত পরিবার।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা জানান, প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয় না। নদী ভাঙ্গনে তাদের ঘর-বাড়ি ভেসে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি স্থানীয়দের।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্র ও নদ-নদীর গতিপথ এমনিই পরিবর্তন হয়েছে। তার ওপর যোগ হয়েছে অবৈধ বালু উত্তোলন। সব মিলে হারিয়ে যাচ্ছে পটুয়াখালীর আগুনমোখা ও রাবনাবাদ নদের ইতিহাস ঐতিহ্য। হুমকিতে পরেছে প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য।

কলাপাড়া জলবায়ু সু-শাসন ও শক্তিকরন প্রকল্প কর্মকর্তা আশিকুর রহমান বলেন, ‘কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন বাঁধ বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। এরমধ্যে দেবপুর গ্রাম অন্যতম।’

আরও পড়ুন:

এদিকে, বালু উত্তোলনের ফলে কলাপাড়ার ধানখালী ও চাম্পাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। তবে, কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী জলসীমায় সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কোটি টাকার বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

রাঙ্গাবালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব দাশ বলেন, ‘রাঙ্গাবালী উপজেলা কেউ যদি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে, এটি যদি আমাদের নজরে আসে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

কলাপাড়া সহকারী কমিশনার ইয়াছিন সাদেক বলেন, ‘খাজুরা বালুমহাল ব্যতীত অন্য যেকোনো জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করা হলে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো’।

কলাপাড়া পানি উন্নয় বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, ‘বালু উত্তোলনের ফলে যে নদী ভাঙন হচ্ছে, এ ব্যাপারে আমরা প্রসাশনের সঙ্গে আলাপ করেছি। অবৈধ বালু উত্তোলনে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদের অনুরোধ করা হয়েছে’।

নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে উপকূলীয় এ অঞ্চল। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি নদ-নদী এবং পরিবেশ ও জীবৈচিত্র্য রক্ষায় এখনই সময় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা।

এফএস