নাটোর সদর উপজেলার বাঙ্গাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক শামীম হোসেন। একবিঘা জমিতে বেগুনের আবাদ করেছেন। জমিতে নিয়ম করেই কীটনাশক দেন। তারপরও শঙ্কায় থাকতে হয়, সঠিক পরিচর্যা না হলে বিফলে যেতে পারে শ্রম আর অর্থ।
শামীম হোসেন বলেন, এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষে দুই লাখ টাকার কীটনাশক প্রয়োগেই ব্যয় হয়েছে। এছাড়া শ্রমিক মজুরি ও পরিচর্যা খরচ তো আছেই।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষে তিন থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা খরচ হয়। বর্গা জমি হলে এর সঙ্গে যোগ হয় আরও ২০ হাজার টাকা। আর এই উৎপাদন ব্যয়ের অর্ধেকই কীটনাশক প্রয়োগে খরচ হয়। জমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে বেগুন বিক্রি পর্যন্ত সময় লাগে অন্তত ৬ মাস। প্রতি বিঘায় গড় উৎপাদন ২০০ মণ। প্রতি মণ দুই হাজার টাকা দরে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি হয়।
নাটোরে বেগুনের পাশাপাশি শিম, বরবটি, ঢেঁড়সসহ অন্তত ৪০ থেকে ৪৫ ধরনের সবজি চাষ হয়। বছরে যার গড় উৎপাদন অন্তত আড়াই লাখ টন। কিন্তু এই সবজি উৎপাদন করতে কৃষকের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কীটনাশকের খরচ।
ভেজাল সারের বিষয়ে কৃষকরা বলেন, আমরা এক কীটনাশক চাই, আর দোকানদার অন্য কীটনাশক দেয়। আগে ১০ দিন পর পর ওষুধ দিলে কাজ হতো। আর এখন ৪ দিন পর পর ওষুধ দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না।
সারা বছর চাহিদার পাশাপাশি বেগুনের দামও থাকে চড়া। কারণ, বাজারে তোলার আগে বেগুনে কীটনাশক বেশি প্রয়োগ করতে হয়, যা উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম বড় কারণ।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কল্যাণ প্রসাদ পাল বলেন, অনুকূল আবহাওয়া না থাকা, কীটপতঙ্গের টিকে থাকার সক্ষমতা বাড়ায় কীটনাশক প্রয়োগ করেও ফল পাচ্ছেন না কৃষক। এই অবস্থায় জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে, যা অত্যন্ত কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব।
নাটোরে প্রতি বছর প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়। যেখান থেকে উৎপাদিত আড়াই লাখ টন সবজি, যার বাজারমূল্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা।




