ইউক্রেন-রাশিয়ার পাল্টাপাল্টি হামলায় ব্ল্যাকআউট ও আগুনের কবলে দুই দেশ

ভ্লাদিমির পুতিন ও ভলোদিমির জেলেনস্কি
ভ্লাদিমির পুতিন ও ভলোদিমির জেলেনস্কি | ছবি: সংগৃহীত
0

ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ ঝাপোরিঝিয়া অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টায় ৭শ'র বেশি ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। প্রাণ গেছে কমপক্ষে একজনের। হামলার কারণে বড়দিনের আগে এবং তীব্র তুষারপাতের মধ্যেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বড় ধরনের ব্ল্যাকআউটের কবলে সারা দেশ। অন্যদিকে, রাতভর ইউক্রেনের ড্রোন হামলার কবলে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো। বিস্ফোরণে নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে চারজন। হামলায় ভয়াবহ আগুনের কবলে রাজধানীর দক্ষিণে তুলার শিল্পাঞ্চল।

গাড়িবোমায় রুশ জেনারেল নিহতের পরদিন একই এলাকায় বোমা বিস্ফোরণে নিহত রাশিয়ার দুই পুলিশ কর্মকর্তা, এক বেসামরিক নাগরিক এবং সন্দেহভাজন। হামলার জন্য ইউক্রেনের গুপ্তচরদের দায়ী করছে রাশিয়া। প্রায় চার বছরের যুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে রুশ সেনাবাহিনীর হাই প্রোফাইল কর্মকর্তা আর সমর্থকদের ওপর গুপ্তহত্যা চালানোর দায় স্বীকার করেছে ইউক্রেনও।

এমন পরিস্থিতির মধ্যেই যুদ্ধকালীন পরপর দু’দিন রাশিয়ার অন্যতম বড় ও সমন্বিত হামলার শিকার ইউক্রেন। সোমবার রাতভর ইউক্রেনের ২১টি অঞ্চলে ৬৩৫টি ড্রোন ও ৩৮টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার একদিন পরই, শুধু ঝাপোরিঝিয়া অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টায় ৭শ'র বেশি ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা চালায় রুশ সেনাবাহিনী। হামলায় ব্যবহৃত হয়েছে ১১৬ ধরনের ভিন্ন ভিন্ন ড্রোন, বেশিরভাগ নকশাই ইরানের, তথ্য ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর। ৬০টি ড্রোন ভূপাতিত করতে সক্ষম হলেও ১৯টি এলাকায় আঘাত হানে ৪৮টি ড্রোন।

আরও পড়ুন:

হামলায় হতাহত তেমন না হলেও, বড়দিনের আগে এবং তীব্র তুষারপাতের মধ্যেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বড় ধরনের ব্ল্যাকআউটের কবলে প্রায় পুরো ইউক্রেন। শুধু আকাশপথে নয়, স্থল অভিযানেও পিছু হঠছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। তীব্র সংঘাতের পর পূর্বের দোনেৎস্ক অঞ্চলের আরও একটি শহরের দখল ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় রুশ সেনাদের হাতে। যদিও যুদ্ধে রাশিয়ার অগ্রগতি মানতে নারাজ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘যদিও রাশিয়ানরা কিছু কাল্পনিক গল্প নিয়ে গর্বিত, কিন্তু আমরা আমাদের প্রকৃত সৈন্য এবং কৃতিত্ব নিয়ে গর্বিত। কুপিয়ানস্ক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ এখনও আমাদের হাতে। এভাবেই কূটনীতিক প্রচেষ্টাসহ সব ধরনের আলোচনার পথ খোলা রেখেছি আমরা।’

বড়দিনের আগেও ইউক্রেনে অস্ত্র বিরতির বিষয়ে রাশিয়া সম্মতি না দেয়ায় আক্ষেপ জানান ক্যাথলিকদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ লিও।

ক্যাথলিকদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ লিও বলেন, ‘আমার খুব খারাপ লাগার একটা কারণ হলো, রাশিয়া যুদ্ধবিরতির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। আবারও আমি সকল সদিচ্ছা-সম্পন্ন মানুষের কাছে এই অনুরোধ করছি: অন্তত ত্রাণকর্তার জন্মোৎসবে শান্তির দিনটি পালন করুন। হয়তো তারা আমাদের কথা শুনবেন। সারা বিশ্বে ২৪ ঘণ্টা শান্তি বিরাজ করুক।’

এদিকে, সংঘাত বন্ধে মধ্যস্থতাকারী যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের সাথে জার্মানির বার্লিনে চলমান শান্তি আলোচনায় যোগ দিয়েছেন ইউরোপের নেতারাও। রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী দখলকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চলগুলো ছাড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব শুধু শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ওপর ভিত্তি করে; যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে ইউরোপীয় নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী, বলছেন ইউরোপীয় নেতারা।

ইএ