৮ দাবিতে রাঙামাটিতে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ | ছবি: এখন টিভি
1

স্বতন্ত্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ ৮ দফা দাবিতে রাঙামাটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীরা সড়ক ব্লকেড, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। আজ (সোমবার, ২২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় দাবি আদায়ে রাঙামাটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক ভবন ও মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

স্বতন্ত্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ ৮ দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাঙামাটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল দশটা থেকে এক ঘণ্টাব্যাপী রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি রোড ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা।

এরপরই সকাল দশটা থেকে সড়কে অবস্থান নিয়ে এক ঘণ্টাব্যাপী রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি রোড ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। এসময় ব্যস্ত এই সড়কের দুই প্রান্তে যানবাহন আটকে পরে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

পরে পৌনে এগারোটায় রাঙামাটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. একরাম উদ্দীন সড়কে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান। এরপরই শিক্ষার্থীরা ব্লকেড কর্মসূচি প্রত্যাহার করলে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।

পরে শিক্ষার্থীরা মূল অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন- কৃষি উপদেষ্টার আশ্বাসের দীর্ঘ ৯ মাস পরও কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

আরও পড়ুন:

৬ষ্ঠ পর্বের শিক্ষার্থী হুমায়ুন উদ্দিন বলেন, ‘এই সরকার আমাদের দাবি তাড়াতাড়ি মেনে নিলে আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে চাই। দাবি মানা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো'। ৬ষ্ঠ পর্বের ওয়াহিম হোছাইন বলেন, ‘আমাদের ৮ দফার প্রথম দাবিই হচ্ছে স্বতন্ত্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা ৪ বছর শিক্ষা জীবন শেষ করে কী করবে-তা স্পষ্ট না। চাকরিতে আমাদের দশম গ্রেড দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।’

৬ষ্ঠ পর্বের মেহেরাজ আজমীন অরিন বলেন, ‘আমরা গত ৮ দিন ধরে আমাদের ন্যায্য দাবীতে এই আন্দোলন করে আসছি। সরকার মেনে না নেওয়ায় এই কঠোর কর্মসূচি দিতো বাধ্য হয়েছি।’ ৪র্থ পর্বের এমং চাকমা বলেন, ‘মাননীয় কৃষি উপদেষ্টা ও সচিবের ৮ দফা দাবি ৬ মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের আশ্বাসে আমরা ক্লাসে ফিরেছিলাম। কিন্তু ৯ মাস পার হলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সরকার। এখন বাধ্য হয়ে এমন কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে।’

শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন ও পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য আহ্বান জানান রাঙামাটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. একরাম উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘তিনটি পরীক্ষা হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা যেন পিছিয়ে না পরে সেজন্য ক্লাস-পরীক্ষা ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। একইসাথে জন-ভোগান্তির কর্মসূচি না নেয়ার অনুরোধ করছি। আশা করছি শিক্ষার্থীরা বিষয়টি বিবেচনায় নেবে।’

আজ পর্ব নির্ধারিত পরীক্ষার পরিমিতি পরিসংখ্যান, মৃত্তিকা বিজ্ঞান, গৃহপালিত পশুপালন এবং খাদ্য ও পুষ্টি ব্যবস্থাপনা এই ৪টি পরীক্ষা বর্জন করেন আন্দোলনকারীরা। সারাদেশে সরকারি ১৮ টি প্রতিষ্ঠানে একযোগে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের ৮ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দাবি, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে গেজেট করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে এবং প্রতি বছর নিয়োগের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা, কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষক সংকট দূরীকরণ করা, কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষাকে ডি.এ.ই এর অধীনস্থ থেকে বের করে সম্পূর্ণভাবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আলাদা প্রতিষ্ঠান করা, সকল কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদটি শুধুমাত্র ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য সংরক্ষিত করা, ডিপ্লোমা কৃষিবিদ দের বেসরকারি চাকুরীর ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০ম গ্রেডের পে-স্কেলে বেতন নির্ধারণ, কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদেরকে মাঠ সংযুক্তি ভাতা প্রদান এবং উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের চাকুরীতে প্রবেশের পর ৬ মাসের ফাউন্ডেশন ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করার দাবি।

ইএ