পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী ক্রিকেটার বিসিবির বয়সভিত্তিক নারী দলের নির্বাচক ও ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা সজল চৌধুরীর ওপর যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন। এ নারী ক্রিকেটার এখন টেলিভিশনকে বলেন, ‘ওই নির্বাচন তাকে বলেন, তুমি আমার সঙ্গে দেখা করো। তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে নাকি? আমারও তো বউ আছে। সমস্যা নেই, তোমার-আমার মধ্যে পার্সোনালই থাকবে।’
এ নারী ক্রিকেটার স্বপ্ন দেখেন বিশ্ব মঞ্চে জ্যোতিদের মতো একদিন তিনিও ব্যাট হাতে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন যদি শুরুতেই প্রচণ্ড হোঁচট খায়। অভিযোগের তীরটা বিসিবির বয়সভিত্তিক নারী দলের নির্বাচক ও ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা সজল চৌধুরীর দিকে। এর আগে তার বিরুদ্ধে জাহানারা-রেশমারাও স্পর্শকাতর অভিযোগ করলেও এখনো দায়িত্বে বহাল আছেন তিনি।
ভুক্তভোগী এ নারী ক্রিকেটার অভিযোগ করেন, সজল স্যার যখন মাঠে থাকেন, উনি নারীদের সঙ্গে কথা বলার সময় তাদের দিকে অশোভন দৃষ্টিতে তাকান।
নারী ক্রিকেটারের পাশে দাঁড়িয়ে যার স্বপ্ন পূরণে পথ দেখানোর কথা, সেই সজল চৌধুরীকেই এখন প্রতিবন্ধকতা মনে করছেন এ নারী ক্রিকেটার।
অভিযোগকারী আরও বলেন, ‘তুমি অনেক সুন্দর। তোমাকে আমার অনেক ভালো লাগে। তোমার রুমমেট যখন থাকবে না তথন তুমি আমার সঙ্গে দেখা করবা। উনি আমার সঙ্গে দেখা করার ট্রাই করতেন। একে অন্যকে দিয়ে ডেকে পাঠাতেন। তখন আমি কথা বলতাম না।’
একবার হলে সেটাকে নিছক ভুল বলে চালিয়ে দেয়া যায় কিন্তু একই রকম প্রস্তাব যদি বারবার দেয়া হয় তাহলে সেটাকে ইচ্ছাকৃত বা উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলেই সাব্যস্ত করছেন অভিযোগকারীরা।
অভিযোগকারী আরও বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের কথা না জিজ্ঞাসা করে উনি আমাকে বাজে মন্তব্য করতেন। যেকোনো সময় তিনি আমাকে কল দিতেন। রাজশাহীতে তাকে ঘুরাতে হবে, হোটেলে একা তিনি— এসব মন্তব্য করতেন।’
আরও পড়ুন:
শুধু তাই নয় বিভাগীয় দলের খেলায় একাদশে সুযোগ না পাওয়ায় এ নারী ক্রিকেটারকে একান্তে স্পেশাল মিটিং করার অফার করার অভিযোগ আছে সজল চৌধুরীর বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘উনি আমাকে বলে তোমাকে নিয়ে পার্সোনাল একটি মিটিং করতে হবে। তুমি বামহাতি ব্যাটসম্যান তোমাকে কেন দলে নেয়া হচ্ছে না। তোমার বিষয়টি আমি দেখছি।’
এদিকে বিসিবি সভাপতি বরাবর চিঠি দেয়া হলেও সাড়া মেলেনি। অভিযোগকারী এ নারী ক্রিকেটারদের অভিযোগে গুরুত্ব না মিললেও, সজল চৌধুরীর স্ত্রী স্বামীর মানহানির প্রতিকার চেয়ে যেই চিঠি লিখেছেন সেটা নাকি গুরুত্বের সাথেই নিয়েছে বিসিবি। নারী উইংয়ের আরেক প্রভাবশালী কর্মকর্তাও নাকি সজলকে বাঁচানোর জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন এমন গুঞ্জনও আছে।
অভিযোগকারী আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দেখলাম না বিসিবি কোনো মেয়ের পাশে আছে। আবার শুনেছি সজল স্যারের স্ত্রী অভিযোগ করেছে। ওনার বিরুদ্ধে বিসিবি আরও লড়াই করছে। বিসিবি একবারও আমার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেনি। প্রেসিডেন্টের কাছে অভিযোগ পাঠিয়েছি। সে এখনো কোনো কিছুই দেখেননি।’
মুখ খুললেই ক্যারিয়ার শেষ সেই ভয়ে অনেক নারী ক্রিকেটার মুখ বন্ধ রাখেন। তবে সাহস করে যারা বিসিবির আস্থাভাজনদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে? নারী ক্রিকেটেরই বা ভবিষ্যৎ কী? আপাতত তাকিয়ে বিসিবির জবাব কিংবা পদক্ষেপের অপেক্ষায়।





