দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ির আয়তন ৭০৩ বর্গমাইল। উপজেলার ১ লাখ মানুষের প্রায় ৯০ ভাগই বাস করে পাহাড় ও উপত্যকায়। বছরের অর্ধেক সময় উজান থেকে নেমে আসা ঢলে জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত থাকে উপজেলাবাসী।
বর্ষায় ভারতের মিজোরাম থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হঠাৎ ফুলেফেঁপে ওঠে কাচালং নদী। লোকালয়ে নদীর পানি প্রবেশ করে মুহূর্তে তলিয়ে যায় ঘরবাড়িসহ নানা স্থাপনা। ২০ হাজার একরের বেশি ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উৎপাদন ঘাটতি আর আর্থিক ক্ষতির শিকার কৃষকরা।
উত্তরে বাবু পাড়া, পূর্বে উগলছড়ি, দক্ষিণে লাইল্যাঘোনা, পশ্চিমে কাচালং নদীর পাড় ঘেঁষে সরকারি সড়ক পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। অভ্যন্তরীণ খাল ভরাট আর কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় পানি নির্গমন পথ ও বন্ধ হয়ে পড়ে। এ কারণে বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাস স্থায়ী হয় এ জলাবদ্ধতা। এতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েন ৫০ গ্রামের ৩০ হাজারের বেশি মানুষ। দৈনন্দিন যোগাযোগ, জীবন-জীবিকা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি নিরাপত্তায় দেখা দেয় সীমাহীন দুর্ভোগ।
আরও পড়ুন:
ভুক্তভোগী বাসিন্দারা জানান, ‘এলাকা ৬ মাস ভালো থাকলে পরের ৬ মাস ডুবে থাকে। তাদের যাতায়াতে কষ্ট হয়। পানি জমে তাদের জমি তলিয়ে যায়’।
আবার শুষ্ক মৌসুমে দেখা দেয় বিপরীত চিত্র। কাচালং নদীতে পানির সংকটে বন্ধ হয়ে যায় নৌ যোগাযোগ। এছাড়া কৃষি জমিতে সেচ দিতে না পারায় বন্ধ হয়ে পড়ে চাষাবাদও ।
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, শুকনার মৌসুমে আমাদের ক্ষেতগুলো পানির অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। সরকারের পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানায় কৃষকরা।
এদিকে কাচালং নদীতে ড্রেজিং, ভাঙা অংশে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস জেলা প্রশাসকের।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘নদীর যে অংশের কথা বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কাজ করছে। আমরা প্রজেক্টে এ বিষয়ের কথা উত্থাপন করব’।
দ্রুতই স্থায়ী সমাধানের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন করবে প্রশাসন, এমনটাই আশা স্থানীয়দের।




