যুদ্ধপরবর্তী গাজার শাসন ও নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর উদ্বেগ আর তৎপরতার কোনো কমতি নেই। কিন্তু অবরুদ্ধ উপত্যকায় ক্ষুধার সঙ্গে লড়তে থাকা মানুষগুলো খাবার পাচ্ছে কী না, এ বিষয়ে একপ্রকার নীরব বিশ্ব সম্প্রদায়। দরজায় শীত কড়া নাড়লেও গাজাবাসীর আশ্রয় সংকট আর ভঙ্গুর স্বাস্থ্যসেবা সংকট নিয়েও উদাসীন তারা।
যুদ্ধবিরতির পর গেল ১০ অক্টোবর থেকে এখনও গাজায় ১৫ হাজারেরও বেশি ত্রাণের ট্রাক প্রবেশ করেছে বলে বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অর্থাৎ উপত্যকাটিতে প্রতিদিন গড়ে প্রবেশ করছে ত্রাণ বোঝাই ৬৭৪টি ট্রাক। যদিও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি এই সংখ্যাটি সর্বোচ্চ ১৭১।
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের তথ্য বলছে, গাজায় যে খাবার সরবরাহ করা হয়েছে- তা চাহিদার তুলনায় অর্ধেক। ফিলিস্তিনি এজেন্সিগুলো বলছে, যে পরিমাণ খাদ্য সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে বাস্তবে তার এক চতুর্থাংশ পূরণ হচ্ছে।
গাজার প্রশাসনের দাবি, এ দুর্ভিক্ষ সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। চাহিদা অনুযায়ী ১৫ হাজার ৬শ' ট্রাকের পরিবর্তে এক মাসে প্রবেশ করেছে মাত্র সাড়ে ৪ হাজার ট্রাক। ডিম, মাংস, চিজ, সবজি ও পুষ্টি সাপ্লিমেন্ট আটকে রেখে কোমল পানীয়, চকোলেট, চিপসের মতো মানহীন খাবার গাজায় প্রবেশে অনুমতি দিচ্ছে ইসরাইল।
আরও পড়ুন:
এদিকে গাজায় স্থিতিশীলতা আনতে আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে সেই তালিকা থেকে তুরস্ককে বাদ দিতে হবে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর অফিস। নেতানিয়াহুসহ ইসরাইলের ৩৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ইস্তাম্বুল। এর জেরেই এমন সিদ্ধান্ত নিলো তেলআবিব। আর টাইমস অব ইসরাইলের দাবি, আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনে কাঠামোগত ত্রুটির কারণে 'স্ট্যাবিলাইজেশন' ফোর্সে সেনা পাঠাবে না আমিরাত।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর অফিসের মুখপাত্র সোশ বেড্রোসিয়ান বলেন, ‘তুরস্ক ৩৭ জন ইসরাইলি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নামও আছে। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনীতে তুরস্কের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র চাপ দিচ্ছে। কিন্তু আপনাদের জানাতে চাই, গাজায় তুর্কির কোনো সেনা সদস্যের পায়ের ছাপ পড়তে দেয়া হবে না।’
এছাড়া হামাসের কাছ থেকে ইসরাইলি এক সেনার মরদেহ ফেরত পাওয়ার পর রোববার সামাজিক মাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে নেতানিয়াহুকে।
তিনি বলেন, ‘বরাবরই বিশ্বাস করতাম, নিহত প্রত্যেক ইসরাইলির মরদেহ ফিরিয়ে আনতে পারবো। এক সেকেন্ডের জন্যেও হাল ছাড়িনি।’
যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে লেবাননে হামলা চালিয়েই যাচ্ছে ইসরাইল। রোববার দক্ষিণ লেবাননে বিমান হামলায় তিন জনকে হত্যার পর সোমবার দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম শহর সিদনে ড্রোন হামলা করেছে ইসরাইল।





